আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক । সারা সপ্তাহের খবর

আমাদের আলোচ্য বিষয়ঃ আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক

ব্যাংকিং গুরুকুল নিউজ আপডেটে আপনাকে স্বাগত।

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ এজেন্ট ব্যাংকিং আমানতে ধাক্কা, ব্যাংক কোম্পানির নামের শেষে ‘পিএলসি’ যোগ করতে হবে, তিন মাসে আমানত কমেছে ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা, প্রবাসী আয় এলো ১০৫ কোটি ডলার, আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও পদোন্নতিতে ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক, ২৪ দিনে ১৪ হাজার কোটি টাকার রে‌মিট্যান্স

 

আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক

 

আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক

এজেন্ট ব্যাংকিং আমানতে ধাক্কা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের ব্যাংক খাত ডলার–সংকটসহ নানামুখী সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে গত বছরের শেষ দিকে এসে দেশের ইসলামি ধারার কয়েকটি ব্যাংকের আর্থিক অনিয়ম সামনে আসে। এতে মানুষের মধ্যে ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়ে বেশ উদ্বেগ দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে এজেন্ট ব্যাংকিং থেকে তিন মাসে ৫০৫ কোটি টাকার আমানত উঠে গেছে।

বাংলাদেশে ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং–বিষয়ক সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ও তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিক অক্টোবর-ডিসেম্বরে এজেন্ট ব্যাংকিং এর আগের তিন মাসের তুলনায় আমানত হারিয়েছে ৫০৫ কোটি টাকা। তাতে গত ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আমানতের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা, যা এর আগের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে ছিল ৩০ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা।

 

আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক

 

ব্যাংক কোম্পানির নামের শেষে ‘পিএলসি’ যোগ করতে হবে

কোম্পানি আইন অনুসারে ‘পাবলিক সীমিতদায় কোম্পানি’ শনাক্ত করার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানিগুলোর নামের শেষে পিএলসি (পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি) যোগ করতে হবে।

গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক পরিপত্রে জানিয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংক-কোম্পানির নাম ও সংঘস্মারক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি গ্রহণের আবশ্যকতা রয়েছে। তবে নামের শেষে পিএলসি যোগ করতে ব্যাংক কোম্পানিগুলোকে আলাদা করে কোনো আবেদন করতে হবে না।

তবে নাম পরিবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার পর বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে হবে এবং পরিবর্তিত নামের গেজেট প্রকাশের জন্য ব্যাংক কোম্পানিগুলোকে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগে আবেদন দাখিল করতে হবে।

তিন মাসে আমানত কমেছে ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা

অনিয়মের মাধ্যমে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার খবর প্রচার হওয়ার পর থেকে দেশের ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকদের মধ্যে আমানত তুলে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত বছরের শেষ তিন মাস তথা অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোয় আমানত কমেছে ১১ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা, যা মোট আমানতের প্রায় ৩ শতাংশ।

শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, ২০২২ সালের অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোতে আমানত কমে ৪ লাখ ৯ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকায় নেমেছে, যা এর আগের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের চেয়ে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ কম। তবে আগের বছরের একই সময় বিবেচনায় নিলে গত ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। ব্যাংক খাতের মোট আমানতের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর অংশ হচ্ছে ২৫ দশমিক ৮১ শতাংশ।

 

আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক

 

প্রবাসী আয় এলো ১০৫ কোটি ডলার

এ সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৮ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রবাসীদের জানায়, বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণ করুন, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য এভাবে আহ্বান জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আর্থিক ঝুঁকিতে রয়েছে ৮ ব্যাংক

বিশেষ ছাড় দিয়ে ব্যাংক খাতে কমানো হয়েছে খেলাপি ঋণ। কাগজে কমলে মন্দ ঋণ কম দেখালেও এসব ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকারি-বেসরকারি খাতের ৮ ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক, অগ্রণী, রূপালী, বেসরকারি খাতের বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এবং বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৬ কোটি টাকা।

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও পদোন্নতিতে ডিপ্লোমা বাধ্যতামূলক

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনাটি ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে কর্মরত কর্মকর্তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা এবং সক্ষমতা বাড়াতে সিনিয়র অফিসার অথবা সমতুল্য পদের পরবর্তী সব পদে পদোন্নতির যোগ্যতার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য দি ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (আইবিবি) কর্তৃক পরিচালিত ব্যাংকিং ডিপ্লোমা উভয় পর্ব (জেএআইবিবি ও ডিএআইবিবি) পাশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

২৪ দিনে ১৪ হাজার কোটি টাকার রে‌মিট্যান্স

চল‌তি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ২৪ দিনে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এ‌সে‌ছে ১৩৩ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (প্র‌তি ডলার ১০৭ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ২৩১ কোটি টাকা।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ২৪ দি‌নে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২২ কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০৭ কোটি ৪৩ লাখ ডলার এবং বিদেশিখাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment