“জিয়া ড্রাম ফ্যাক্টরী কেস” [ কেস নং-৪২ ]

“জিয়া ড্রাম ফ্যাক্টরী কেস” [ কেস নং-৪২ ]

“জিয়া ড্রাম ফ্যাক্টরী কেস” [ কেস নং-৪২ ]

জিয়া ড্রাম ফ্যাক্টরী কেস

ঢাকা শহরের প্রান কেন্দ্রে “জিয়া” নামে একজন উদ্যোক্তা সরকারী খাস জমিতে ড্রামের ব্যবসা শুরু করে। এখানে উল্লেখ্য যে, জিয়া নৈতিক দিক দিয়ে ভাল ছিল না। ড্রাম উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল হল লৌহ ও ইস্পাতের শিট (Sheet)) সে বিদেশ থেকে এই শিট ব্যাংকের Quantity allocation-এর আওতায় আমদানী করত। এবং এখানে উল্লেখ্য যে, ব্যাংক আমদানীকারককে যে Finance করত তা Pass Book” নামে একটি হিসাব বইতে সংরক্ষিত থাকত।

এভাবে জিয়া’র কাছে ব্যাংকের ২৫ কোটি টাকা আটকা পড়ে। বাকে তখন অনেকবার জিয়াকে তার ঋণ সমন্বয় (Adjustment) এর জন্য অনুরোধ করলেও জিয়া তাতে কর্ণপাত করেন। এ রকম পরিস্থিতিতে জিয়া অন্য আরেকটি ব্যাংকে (২য় বাংক) আবেদন করার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হয়। এখানে উল্লেখ  ব্যাংকের জন্মদিত Pass Book এবং clearance ছাড়া দ্বিতীয় ব্যাংকের থেকে ঋণ নেয়া সম্ভব নয়।

প্রথম ব্যাংক তাকে Pass Book বুক দিবে না বুঝতে পেরে সে প্রথম ব্যাংককে “শুষ্ক অফিসের নিরীক্ষার জন্য পাস বই দরকার” এ রকম একটি মিথ্যা কারণ দেখিয়ে তা আবেদন করে। তখন প্রথম ব্যাংক সরল বিশ্বাসে পাশ বইটি জিয়ার কাছে হস্তান্তর করে। জিয়া তখন আনন্দে তর পাশ বইটি নিয়ে তার পূর্ব পরিচিত ২য় ব্যাংকের উচচ ব্যবস্থাপনা পর্যদ দাখিল করে। এই ভিত্তিতে দ্বিতীয় ব্যাংক তখন Pass Book এবং clearance মনে করে আবার তাকে ২৫ কোটি টাকা বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানীর জন্য ঋণ দেয়। জিয়া তখন ১০ কোটি টাকায় কাঁচামাল আমদানী করে এবং কাগজে কলমে ২৫ কোটি দেখিয়ে Over invoicing করে।

জিয়া ড্রাম ফ্যাক্টরী কেস

দ্বিতীয় ব্যাংক খোঁজ নিয়ে জানতে পারে গুদামে মাত্র ১০ কোটি টাকার কাঁচা মাল আছে। আসলে জিয়ার প্রথম ব্যাংকে যে Bad Debt ছিল তাতে করে নতুন কোন LC করার সুযোগ ছিল না। এবং এই প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় ব্যাংক প্রথম ব্যাংকে অভিযোগ করল যে তারা কেন জিয়াকে (Pass Book) clearance দিয়েছে।

প্রথম ব্যাংক তখন জানাল যে, তারা কোন clearance দেয়নি। এরূপ পরিস্থিতিতে দুই ব্যাংকের ৫০ কোটি টাকা আটকা পড়ল। সরকার এ রকম একটা পরিস্থিতিতে ফ্যাক্টরী অধিগ্রহন করল। এই ঘটনার ভিত্তিতে ব্যাংকের কিছু Officer চাকুরীচ্যুত হল। ব্যাংকিং এর ছাত্র অথবা একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হিসেবে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আপনার মতামত কি ?

“ক্ষুদ্র জুতা প্রস্তুতকারক কেস” [ কেস নং-৪৩ ]

পুরানো ঢাকার একজন জুতা প্রস্তুতকারক জনাব আলী জুতা প্রস্তুতে তিনি খুবই পারদর্শী ছিলেন এবং তার প্রস্তুতকৃত জুতার মানও উন্নত ছিলো। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তাঁর ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়নি। তাছাড়া তার জামানত দিয়ে ঋণ নেওয়ার মতো অবস্থাও ছিলো না। যে কারণে তার পণ্যের বাজারে ব্যাপক চাহিদার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারনি। হঠাৎ একদিন এক ব্যাংক ম্যানেজার দোকানে তার জুতা দেখে ব্যাংকে আসতে বলে।

পরবর্তীতে ম্যানেজার ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় তাকে ২৫,০০০ টাকা ঋণ দেয়। ফলে তার উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে তাঁর পণ্যের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। চাহিদা মতো যোগান দেওয়ার জন্য তার কাঁচা মালের প্রয়োজন। তার ব্যবসায়ের পরিধি বৃদ্ধি পায় এবং কাঁচামালের জন্য ব্যাপক অর্থের প্রয়োজন দেখা দেয়। কিন্তু ব্যাংকের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ২৫,০০০ টাকার বেশী ঋণ জামানত ছাড়া দেওয়া হয় না। প্রচলিত বিধি মোতাবেক জামানত ছাড়া ব্যাংক এবার কোন ক্ষণা নিতে অপাক্ষাতা প্রকাশ করে। তার কাছ থেকে যারা ধারে পণ্য কিনেছিলো তারাও তাঁর উন্নতিতে ইশান্বিত হয়ে বাকীতে কেনা পণ্যের মূল্যা পরিশোধ করেনি।

জিয়া ড্রাম ফ্যাক্টরী কেস

যেহেতু সে ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ পায়নি এবং তার সহযোগীরাও অর্থ ফেরৎ দেয়নি সে কারণে তিনি চাহিদা মতো কাঁচামাল কিনতে ব্যর্থ হন। ব্যবসায়ের নিয়মানুযায়ী ক্রেতা বিক্রেতার কাছে থেকে বাকীতে ক্রয় করে এবং অর্থ পাওয়ার পর পরিশোষা করে। কিন্তু ধারে বিক্রি করা পণ্যের নাম ফেরত না পাওয়ায় যাদের কাছ থেকে কাঁচামাল ধারে ক্রয় করেছিলো তাদের অর্থও পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় এবং তারা আর ধারে কাঁচামাল সরবরাহ করেনি। যদি কাঁচামাল ঠিক মতো না পাওয়া যায় তাহলে উৎপাদন বিঘ্নিত হয় এবং চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে না। ফলে ঐ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তার বাজার হারিয়ে ফেলে এবং পরবর্তীতে কোম্পানী বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তার এই ব্যবসায় সফল না হওয়ার প্রধান কারণ হলো চলতি মূলধন সমস্যা।

চলতি মূলধনের কারণে কাঁচামাল কিনতে পারেনি এক অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান যারা তার সাথে প্রতারণা করেছে যে কারণে তার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনঃ

 

Leave a Comment