ব্যাংকের বিনিয়োগের কর্মপন্থা [ Bank’s Investment Policy ]

ব্যাংকের বিনিয়োগের কর্মপন্থা [ Bank’s Investment Policy ] বিনিয়োগ কর্মপন্থা অনেকটা নির্ধারিত রাজপথের মত। যেমন রাজপথ অনুসরণ করে গন্তব্যে পৌঁছাতে ছোট বালকেরও অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় না। তেমনি বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণকালে পূবাহ্নেই এরূপ সিদ্ধান্তের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ সম্পর্কে পরিষ্কার নির্দেশনা থাকলে ভুল -ত্রুটি ও সিদ্ধান্তহীনতা কম হয়ে থাকে কোন ধরণের ঋণপত্রে কি পরিমান বিনিয়োগ কত সময়ের জন্য করা ব্যাংকের জন্য অপেক্ষাকৃত বেশী সুবিধাজনক তা চিহ্নিত করার নির্দেশনা থাকলে ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত পরিহার করা সম্ভব।

অনেক ব্যাংক কর্মকর্তাই লিখিত বিনিয়োগ কর্মপন্থা নির্ভরযোগ্য হয়না বলে মন্তব্য করে থাকেন। কারণ অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন, ব্যাংকের বিনিয়োগযোগ্য তহবিলের পরিবর্তন তথা অন্যবিধ পরিবর্তিত অবস্থায় লিখিত বিনিয়োগ কর্মপন্থা অল্প দিনেই অকার্যকর হয়ে থাকে।

এ কথায় সত্যতা আছে বটে। রাজপথে খাদ হবে, যানজট হবে, হাইজ্যাক, ছিনতাই ইত্যাদি হবে ভেবে রাজপথ তৈরীর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যেমন তদ্রূপই এটি একটি খোড়াযুক্তি। কর্মপন্থা বিভিন্ন কারণে অবস্থার প্রয়োজনে পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত করতে হবে বলে মোটেই বিনিয়োগ কর্মপন্থা প্রণয়নের প্রয়োজন নাই একথা গ্রহনযোগ্য নয়।

ব্যাংকের বিনিয়োগের কর্মপন্থা [ Bank's Investment Policy ]

ব্যাংকের বিনিয়োগের কর্মপন্থা [ Bank’s Investment Policy ]

একটি সুষ্টু ও কার্যমুখী ব্যাংক বিনিয়োগ কর্মপন্থায় যে যে উপাদান লক্ষ্য করা যায় তা পরবর্তী পৃষ্ঠায় দেখানো হল ঃ

বিনিয়োগ কর্মপন্থার উপাদানসমূহ

সাধারন উপাদানসমুহ

নীতি পদ্ধতি উপাদানসমুহ

১. বিনিয়োগ কার্যক্রমের লক্ষ্য নির্ধারণ

২. ব্যাংকের বিনিয়োগের যুক্তিযুক্ততা নিরূপণ

৩. তারল কৌশলে বিনিয়োগের অবস্থান

৪. বিনিয়োগযোগ্য তহবিল নিরূপণ

৫. খাতভেদে বিনিয়োগের উচ্চচ-নিম্ন মাত্রা নির্ধারণ

৬. বিনিয়োগ-মেয়াদ মিশ্রণ

৭. প্রতিযোগীদের মোকাবেলায় বিনিয়োগ কৌশল

৮. ব্যবসায়ীক নৈতিকতার নির্দেশনা

৯. বিনিয়োগের সামগ্রিক কৌশল

১০. বিনিয়োগ কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম

১২. বিনিয়োগযোগ্য খাতসমূহের সামগ্রিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

১১. বিনিয়োগের মর্যাদাকরন ও শ্রেণীবিন্যাস।

১৩. বিনিয়োগ ও তারল্য পরিকল্পনার মধ্যে সমন্বয়করণ।

১৪. বিনিয়োগ বহুধাকরন নির্দেশিকা

১. বিনিয়োগ আইনের লিপিবদ্ধ

২. বিনিয়োগ তথ্য সংগ্রহকৌশল

৩. বিনিয়োগ লেনদেনের প্রকৃতি

৪. ঋণপত্রে সম্ভাব্য ক্ষতি সংরক্ষণ ব্যবস্থা

৫. সুদের হার পরিবর্তনের পূর্বাভাস দান

৬. বিনিয়োগ ভেদে করের অবস্থা নির্ধারণ

৭. সাধারন বিনিয়োগ পরিমাণ

৮. পোর্টফলিও নির্ধারণ

৯. বিনিয়োগ ঝুঁকির পরিমাণ নির্ধারণ

১০. বিনিয়োগ বিশ্লেষণ ধাপ

১১. বিনিয়োগের দলিলাদী

১২. বিনিয়োগ লেনদের সংরক্ষণ

১৩. কর্মকর্তাদের ক্ষমতা হস্তান্তর

১৪. বিনিয়োগ কর্মকর্তাদের কার্য বিবরণ

১৫. বিনিয়োগ কর্মকর্তা ভেদে বিনিয়োজিত অর্থ মঞ্জুর করার ক্ষমতা

ব্যাংকের বিনিয়োগের কর্মপন্থা [ Bank's Investment Policy ]

উপরোল্লিখিত সারণীতে একটি ব্যাংকের ফলপ্রসূ এবং সুষ্ঠু বিনিয়োগ কর্মপন্থায় (Investment Policy) সামগ্রীকভাবে যে সমস্ত উপাদান থাকা আবশ্যক তা উল্লেখ করা হয়েছে যথা: সাধারণ উপাদান ও নীতি-পদ্ধতি সংক্রান্ত উপাদান। উপাদানসমূহ স্বনামে বোধগম্য অবশ্য ভবিষ্যতে স-বিস্তারে আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। যা হোক বিনিয়োগযোগ্য তহবিল সঠিকভাবে নির্ধারণ করে কি উদ্দেশ্যে বিনিয়োগ করা হবে তা পরিষ্কার থাকা প্রয়োজন । বিনিয়োগ কার্যক্রমে যে কৌশল অবলম্বন করা হবে তাও পূর্বাহ্নে জানা প্রয়োজন বিনিয়োগ কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব জবাবদিহিতা ও কাজের বিবরন সবার কাছে বোধগম্য থাকবে দক্ষ ও ফলপ্রসূ বিনিয়োগ কার্য সম্পাদন প্রতিটি কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষে সহজতর হয়।

বিনিয়োগ কার্যক্রম ও তারল্য সংরক্ষণ কিরূপে সমন্বিত হবে এর স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলে সম্ভাব্য সর্বোচচ পরিমাণ তহবিল বিনিয়োগ ব্যবহার করেও সন্তোষজনক তারল্য রক্ষা করা সম্ভব।

ব্যাংকের বিনিয়োগের কর্মপন্থা [ Bank's Investment Policy ]

বিনিয়োগ ঝুঁকি ধরণ ও এর বিপরীতে উপযুক্ত কলা কৌশল তথা পোর্টফলিও নির্বাচন ও পোর্টফলিও বহুধাকরণের মাধ্যমে ঝুঁকি কমানোর নির্দেশনা বিনিয়োগ কর্মপন্থায় স্পষ্ট বিদৃত থাকলে অপেক্ষাকৃত নির্ভুল বিনিয়োগসিদ্ধান্ত গ্রহণে দায়িত্ব প্রাপ্ত ঋণ কর্মকর্তাবৃন্দ সফলভাবে কার্যসম্পাদনে সক্ষম হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment