Table of Contents
ডায়না টেক্সটাইলস কেস
[কেস নম্বর: ৯]
প্রেক্ষাপট
ডায়না টেক্সটাইলস লিঃ নামে একটি প্রতিষ্ঠান টেক্সটাইল ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় সম্ভাব্যতা যাচাই (Feasibility Study) শেষে ব্যাংক ঋণ পাওয়ার আশায় পলাশ ব্যাংক, ইমামগঞ্জ শাখায় আবেদন করে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের যাবতীয় তথ্য যাচাই-বাছাই করে ঋণ প্রদানে সম্মত হয়।
প্রকল্পের বিবরণ
- মোট প্রকল্প খরচ: ১০ কোটি টাকা
- Debt-Equity Ratio: ১:১ (অর্থাৎ, প্রকল্পের অর্ধেক অর্থ ব্যাংক ও অর্ধেক উদ্যোক্তা প্রদান করবে)
- ঋণের মেয়াদ: ৫ বছর
ব্যাংক অনুমোদিত ঋণ অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় মেশিনারি আমদানী ও ইনস্টলেশন সম্পন্ন করা হয়।
সমস্যার সূত্রপাত
প্রকল্প চালু হওয়ার পর চলতি মূলধন (Working Capital) সংক্রান্ত দ্বিমত দেখা দেয়:
- পরিচালকদের দাবি: ২ কোটি টাকা চলতি মূলধন রাখা দরকার
- ব্যাংকের সিদ্ধান্ত: চলতি মূলধন সীমিত করে ১ কোটি টাকা নির্ধারণ
ব্যাংক সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবসা পরিচালনা করলেও, চলতি মূলধনের অভাবে উৎপাদন চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠান। ফলে, বাজারে গ্রাহকরা অন্য কোম্পানির পণ্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে এবং ডায়না টেক্সটাইলসের বিক্রয় হ্রাস পায়।
পরিণতি
- বিক্রয় ও নগদ প্রবাহ কমে যায়
- ব্যাংকের ঋণ কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতা দেখা দেয়
- দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠান লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও চলতি মূলধনের অভাবে বিপর্যয় ঘটে
- ব্যাংক কর্মকর্তাদের চলতি মূলধন নির্ধারণে অদূরদর্শিতা এই সমস্যার মূল কারণ হিসেবে ধরা হয়
- পরবর্তীতে ব্যাংক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে
ধামরাই ডেইরি ফার্ম কেস
প্রেক্ষাপট
ধামরাই ডেইরি ফার্ম একটি চলমান দুগ্ধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, যা স্থানীয় বাজারে দীর্ঘদিন ধরে পণ্য সরবরাহ করে আসছে। সম্প্রতি উদ্যোক্তারা ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ১৯৯৮ সালের মার্চে স্থানীয় কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৩ বছরের মেয়াদে ২ কোটি টাকার ঋণের জন্য আবেদন করেন।
ব্যাংকের সিদ্ধান্ত
ব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে। ঋণ গ্রহণের শর্তে প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের নিকট প্রকল্পটি বন্ধক (Mortgage) রেখে ঋণ গ্রহণ করে। মালিকপক্ষ নতুন মূলধন না দেয়।
সমস্যা ও অনিয়ম
- সরকারের উচ্চ শুল্ক আরোপ, গবাদিপশু খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি, ঔষধ সামগ্রীর দুষ্প্রাপ্যতা ও মূল্যবৃদ্ধি, বাজার প্রতিযোগিতার কারণে ব্যবসায় ব্যর্থতা
- উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণের টাকা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার শুরু করে
- ২ জন পরিচালক মিঃ কদম ও মিঃ গোপাল ঋণ টাকা ভাগাভাগি করে নেয়
- মিঃ কদম ঢাকায় স্ত্রীর নামে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ক্রয় করে
- মিঃ গোপাল ডিভি ভিসা নিয়ে আমেরিকা চলে যায়
- ব্যাংক ঘটনাটি জানতে পেরে ঋণের নিরাপত্তা হারায়
ফলাফল
- কোম্পানীর সম্পত্তি, যা ব্যাংকের নিকট বন্ধক ছিল, প্রকল্প অর্থায়নের এক-পঞ্চমাংশের সমান
- নির্দেশকগণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যাংকের তহবিল দখল করে
- ব্যাংক ক্ষতিপূরণের জন্য উদ্যোক্তাদের সাথে যোগাযোগ ব্যর্থ হওয়ায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে
সারসংক্ষেপ:
উপরোক্ত কেসগুলো ব্যাংক ঋণের ব্যবহার, প্রকল্প পরিচালনা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অদূরদর্শিতা ও অনিয়মের ফলে ব্যবসায়িক ব্যর্থতার দৃষ্টান্ত সরূপ। সঠিক চলতি মূলধন নির্ধারণ ও ঋণের সঠিক ব্যবহারের গুরুত্ব এখানে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।