Site icon Banking Gurukul [ ব্যাংকিং গুরুকুল ] GOLN

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্রয়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০৯ সালের ১৬ নভেম্বর কোম্পানি আইন ১৯৯৪ অনুসারে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থাকে একীভূত করে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ব্যাংকটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-এ নিবন্ধিত। সরকারি সিদ্ধান্তের আওতায় বাংলাদেশে শিল্প ব্যাংক (বিএসবি) এবং বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা (বিএসআরএস)-কে একীভূত করে ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি বিডিবিএল-এর কর্মযাত্রা শুরু।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর ইতিহাস

১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে, শিল্পের দ্রুত বিকাশে বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর। একই উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর। ২০০৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বর, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড দুটি সংস্থাকে অধিগ্রহণ করে। সরকারি সিদ্ধান্তের আওতায় বাংলাদেশে শিল্প ব্যাংক (বিএসবি) এবং বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা (বিএসআরএস)-কে একীভূত করে বিডিবিএল গঠিত এবং রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস এ নিবন্ধিত হয়। রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস থেকে সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স ও অনুমোদন নিয়ে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে বিডিবিএল-এর কার্যক্রম শুরু হয়।

বিএসবি এবং বিএসআরএস এর পরিসম্পদ ও দায়গ্রহণের ভেন্ডারস এগ্রিমেন্ট ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে সরকার এবং সরকার মনোনীত বিডিবিএল-এর পরিচালনা পর্যদ কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয়। ২০১০ সালের ০৩ জানুয়ারি, ব্যাংকটি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। ১৯৯১ সালের ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের আওতায় যাবতীয় অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ব্যাংকিং এর কার্যাবলী সম্পাদনে বিডিবিএল-এর কর্মসূচি পরিব্যাপ্ত।

 

 

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর কার্যক্রম

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর বিস্তৃতি

সারা দেশে বর্তমানে বিডিবিএলের ব্যাংকিং শাখা রয়েছে ৫০টি। ব্যাংকটি দেশে তার ৫০টি শাখা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাহকদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে সব ধরনের বাণিজ্যিক ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে থাকে। বিগত ১০ বছরে ব্যাংকটি অনেক মাইলফলক অর্জন এবং অসংখ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে বিডিবিএল সর্বদাই বাংলাদেশের একটি প্রযুক্তি-নির্ভর উদ্ভাবনী ব্যাংক হিসেবে নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছে। সর্বশেষ রাজধানীর মিরপুর-১০ এ বিডিবিএলের ৫০তম শাখা যাত্রা শুরু করেছে। সোমবার ব্যাংকটির নতুন এ শাখা রোকেয়া সরণি, মিরপুর-১০, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল)এর ৫০ তম শাখা ঢাকায় উদ্বোধন করা হয়।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল) এ অনলাইন ব্যবস্থাপনায় ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রযুক্তির জয়-জয়কারের নতুন এই যুগে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষ্যে বিডিবিএল ব্যাংক সাফল্যের সাথে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস ব্যাংকিং, সর্বাধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি, মোবাইল ব্যাংকিং,অনলাইন একাউন্ট ওপেন,ই কেওয়াইসি ,যথোপযুক্ত নেটওয়ার্ক সমাধান, ২৪/৭ এটিএম সেবা এবং নানা ধরনের ই-সেবা চালু চলমান আছে।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর প্রযুক্তিগত ব্যাংকিং

২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে ব্যাংকিং লেনদেন তথা সামগ্রিক কার্যক্রমকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অন-লাইন ব্যাংকিং কার্যক্রম CBS শুরু হয়েছে।এছাড়াও বিডিবিএলের যে কোন ব্রাঞ্চ থেকে কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে সব ধরনের লেনদেন,বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক ক্লিয়ারিং হাউস (ব্যাচ) এর মাধ্যমে দু-ধরনের আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তি করা হয়।

অপরটি হছে সারাদেশে আন্তঃ ব্যাংকিং লেনদেন বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) বা ‘ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার সিস্টেম’-এর আওতায় আন্তঃ ব্যাংক ইলেকট্রনিক ডেবিট- ক্রেডিট লেনদেন প্রক্রিয়া যে কোন ব্যাংকের শাখা হতে সহজতর ও দ্রুততম সময়ে কোন প্রকার চার্জ বা ফি ছাড়া সম্পাদন করা হয়।তাছাড়াও বিডিবিএল সকল শাখাসমূহে রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস)ব্যবহার করে দ্রুত ও ঝুঁকিমুক্ত উপায়ে দেশের যে কোনো জায়গা থেকে এক লাখ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের পেমেন্ট তাৎক্ষণিক করা যায়। আন্তঃব্যাংক পরিশোধ ব্যবস্থায় যত ব্যবস্থা রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত পরিশোধ হয় আরটিজিএসের মাধ্যমে।বিশ্বের যেকোনা স্থান থেকে গ্রাহক ও ব্যাংক এ লেনদেনে করতে পারবে।

 

 

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর পরিচালনা পদ্ধতি

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যাংকটির সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মহাব্যবস্থাপক এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মরত বিভাগীয় প্রধানগণ সহায়তা করে থাকেন। ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকগণ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নিকট সরাসরি এবং বিভাগীয় প্রধানের নিকট বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডের রিপোর্ট করে থাকেন। ব্যাংকটির আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশান এর সেকশন ৯৫ অনুসারে ১০ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ থাকবে যার প্রধান থাকবে চেয়ারম্যান। পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান চেয়ারম্যান হচ্ছে সাবেক সিনিয়র সচিব শামীমা নার্গিস।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর আর্থিক সক্ষমতা

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সাম্প্রতিক মন্দা স্বত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)। বিডিবিএল ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর প্রাক্কালে ১৭টি শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ব্যাংকের শাখা ৪৬ টিতে উন্নীত হয়েছে। ২০১৪ সালে আবশ্যিক মূলধন ৫১২ কোটি টাকার বিপরীতে প্রায় ১২৯৭ কোটি টাকা মূলধন সংরক্ষণ করা হয়েছে, যা প্রয়োজনীয় মূলধনের তুলনায় ৭৮৫ কোটি টাকা বেশি। বর্তমানে বিডিবিএলের কোন প্রকার প্রভিশন ঘাটতি নেই।

ব্যাংক তথ্য মতে, ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুর প্রাক্কালে বিডিবিএলের আমানতের পরিমাণ ছিল ১৪২ কোটি টাকা যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪ সালে ২০০০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। একইভাবে ঋণ ও অগ্রিম বিতরণের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ৪ বছরে সরকারি পাওনা বাবদ ৩৬৫ কোটি টাকার বিপরীতে এরইমধ্যে মোট ৩৩০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। সরকারি কোষাগারে ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯৭ কোটি টাকা কর পরিশোধ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ

Exit mobile version