ব্যাংক ব্যবসায়ের বহিঃ উপাদান

ব্যাংক ব্যবসায়ের বহিঃ উপাদান [ External Factors of  Bank Environment ] : ব্যাংক ব্যবসায়ের বহিঃ উপাদানসমূহ অত্যন্ত ব্যাপক এবং এদের প্রভাব অত্যন্ত প্রখর। সুতরাং এ উপাদান সমূহ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। উপাদানসমূহের প্রকৃতির ভিত্তিতে এ গুলোকে পাঁচটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়ঃ

 

ব্যাংক ব্যবসায়ের বহিঃ উপাদান [ External Factors of  Bank Environment ]

 

Table of Contents

ব্যাংক ব্যবসায়ের বহিঃ উপাদান:

অর্থনৈতিক উপাদানসমূহ [ Economic Factors ]

একটি দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চিত্র ও বৈশিষ্ট্য ঐ দেশের সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে প্রভাবিত করবে এটাই স্বাভাবিক। ব্যাংকিং ব্যবসায়ের উপর যে সব প্রভাব সৃষ্টিকারী অর্থনৈতিক উপাদান আছে নিম্নে সংক্ষেপে সেগুলো আলোচনা করা হলোঃ

 

India, Bank, Currency, Money, Free Photo from Pixabay.com

 

১. দেশের অর্থব্যবস্থায় উন্নতির পর্যায়তা- (State of Development of Financial System):

একটি দেশের অর্থব্যবস্থার ওপর সে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থার উন্নয়ন বহুলাংশে নির্ভর করে। দেশের অর্থব্যবস্থা যদি উন্নত এবং সংগঠিত হয় তা হলে তা ব্যাংকিং ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। অপরদিকে অর্থব্যবস্থা যদি অনুন্নত বা অসংগঠিত হয় অর্থাৎ যদি তা উন্নতির প্রাথমিক স্তরে অবস্থান করে তাহলে ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য তা সম্পূর্ণ প্রতিকূল।

২. তহবিলের পর্যাপ্ততা – (Adequacy of Fund):

একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও এর পরিচালনার জন্য প্রচুর পরিমাণ তহবিলের প্রয়োজন হয়। সুতরাং কোন অর্থনীতিতে যদি তহবিল সংগ্রহের বহুমুখী উৎস থাকে এবং পর্যাপ্ত তহবিল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে ঐ অর্থনীতি ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল। অপরদিকে সহজ এবং সুলভ পুঁজি বা তহবিলের অভাব ব্যাংক ব্যবসায়ের প্রতিকূল পরিবেশেরই পরিচায়ক।

৩. যোগাযোগ ব্যবস্থা (Communication System):

উন্নত এবং দক্ষ ব্যাংকিং সেবা সরবরাহ করবার জন্য উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যাবশ্যক। সুতরাং বলা যেতে পারে যে, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাংকিং ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাংকিং ব্যবসায়কে প্রতিকূলতার সম্মুখীন করে থাকে।

৪. মুক্তবাজার অর্থনীতি (Free Market Economy):

কোন দেশের অর্থনীতি যদি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয়। অর্থাৎ বাজার ব্যবস্থার চালিকা শক্তিগুলো যদি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে তাহলে ঐ অর্থনীতিকে মুক্ত বাজার অর্থনীতি বলা হয়। এ ধরনের অর্থনীতিতে পুঁজি, শ্রম তথা উৎপাদনের সমস্ত উপকরণ নিয়ন্ত্রণমুক্ত, গতিশীল বলে এ উপকরণগুলো সহজে ও সুলভে পাওয়া যায়। এ রকম অর্থনীতিতে দেশের সর্বত্র ব্যবসায় বাণিজ্যে, শিল্পে ইত্যাদি বেসরকারী উদ্যোগে উন্নতি লাভ করে। আর এদের প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকের চাহিদা বাড়ে, ফলে ব্যাংকের দ্বারা এদের অর্থায়ন সহজতর হয়। অর্থাৎ এটা ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। অপরদিকে নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য একটি প্রতিকূল পরিবেশ।

৫. মুদ্রা ও রাজস্বনীতি (Monetary and Fiscal Policy):

কোন দেশের মুদ্রা ও রাজস্বনীতি সে দেশের ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য যেমন অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, তেমনি প্রতিকূল পরিবেশও সৃষ্টি করতে পারে। যেমনঃ বাজারে অধিক পরিমাণ মুদ্রা সরবরাহ নীতি বাজারের তহবিলকে বা পুঁজিকে সহজলভ্য করে তোলে, যা ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল। অপরদিকে মুদ্রা হ্রাসকরণ নীতি ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য একটি প্রতিকূল পরিবেশ। মুদ্রা সংকোচন নীতির ফলে ব্যাংকের হাতে তহবিল কমে যায় এবং ব্যাংকের ঋণদান ক্ষমতাও কমে যায়। ফলে ব্যাংকের অধিক মুনাফা অর্জন ব্যাহত হয়।

আবার অধিকতর কর আরোপ করার রাজস্বনীতি ব্যাংক ব্যবসায়কে নানাবিধ উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। যেমনঃ সঞ্চয়ের ওপর করারোপের ফলে সঞ্চয়ীগণ নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। ঠিক একই ভাবে আমদানী রপ্তানী বাণিজ্যের ওপর কর বা শুল্ক অযাচিত পরিমাণে আরোপ করলেও ব্যবসায়ীগণ নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন, যা ব্যাংকের লেনদেনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। অর্থাৎ এ উভয়বিধ অবস্থাই ব্যাংকের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ। অন্যদিকে উদার মুদ্রা ও রাজস্বনীতি ব্যাংকের ব্যবসায়ের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।

৬. শিল্পনীতি (Industrial Policy):

শিল্পনীতির ওপর ও ব্যাংকের সফলতা, ব্যর্থতা অনেকাংশে নির্ভর করে। উদার শিল্প নীতিতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ব্যক্তি মালিকানাধীন বেসরকারী খাতকে সুসংগঠিত করাহলে বিনিয়োগকারীগণ উৎসাহিত হন। এতে ব্যাংকে ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং সর্বোপরি ব্যাংকের মুনাফা অর্জন ত্বরান্বিত হয়। অপরদিকে সংরক্ষণশীল শিল্পনীতি বা ব্যক্তিমালিকানায় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে নিরুৎসাহিত করা হলে তা প্রকারান্তরে ব্যাংকের জন্য একটি প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি করে।

৭. বিনিয়োগের সুযোগ (Investment Opportunity):

ব্যাপক বিনিয়োগের সুযোগ একটি ব্যাংকের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, আবার বিনিয়োগের সুযোগ সীমিত হলে তা ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য একটি প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিনিয়োগের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকলে বিনিয়োগকারীগণ ব্যাংকের ঋণ চাহিদা সৃষ্টি করেন যা ব্যাংকের জন্য ব্যবসায়িক সুবিধা সৃষ্টি করে।

৮. সুস্থ প্রতিযোগিতা (Healthy Competition):

একচেটিয়া কারবারী অবস্থা কোনক্রমেই ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল নয়। এটা নতুন ব্যাংক ব্যবসায়কে অংকুরে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিতে পারে। কিন্তু সুস্থ প্রতিযোগিতা ব্যাংক ব্যবসায়ের প্রয়োজনীয় দক্ষতা সৃষ্টির জন্য অনুকূল। অধিকতর উন্নত সেবা প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ ব্যাংক প্রতিযোগিতা প্রত্যেকটি কার্যরত ব্যাংককে সফলতার শিখরে পৌঁছাতে পারে।

৯. মূল্য নীতি-(Pricing Policy):

মূল্য নীতির আওতায় সরকার দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সাধারণ আয়ন্তর স্থিতিশীল এবং গ্রহণযোগ্য স্তরে রাখাই মূল্যনীতির উদ্দেশ্য। মূল্য যদি অস্থিতিশীল হয় বা অগ্রহণযোগ্য হয় তা হলে উৎপাদক শ্রেণী নিরুৎসাহিত হবে; আর উৎপাদক শ্রেণী নিরুৎসাহিত হলে ব্যাংকের ঋণ চাহিদা কমে যাবে এবং ব্যাংকের কারবারী লেনদেনও কমে আসবে। সুতরাং সরকারের একটি বাস্তবভিত্তিক সুনির্দিষ্ট মূলানীতি ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিকারী উপাদান বলে গণ্য করা যেতে পারে।

১০. আমদানী-রপ্তানীনীতি (Import-Export Policy):

আমদানী-রপ্তানী নীতি ব্যাংক ব্যবসায়কে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে থাকে। রপ্তানী নীতি উদার হলে অর্থাৎ রপ্তানীকারকদের জন্য আকর্ষণীয় হলে তারা উৎসাহী হবেন। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যে সহায়তা করার মাধ্যমে ব্যাংক অধিকতর ব্যবসায় করতে পারে। আমদানী নীতি যদি উদার হয় অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম নিয়ন্ত্রিত হয় তা হলে ঋণ সুবিধা সরবরাহ করে আমদানী বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যাংক বিস্তর মুনাফা অর্জন করতে পারে।

১১. সাধারণ আয় স্তর- (General Income Level):

জনসাধারণের আয়ন্তর যদি নিম্নমুখী বা কম হয় তা হলে সঞ্চয়ের পরিমাণ হ্রাস পাবে। ফলে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহে বিঘ্ন ঘটে এবং ব্যাংকের তহবিলের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। সুতরাং জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান ও অধিক আয়ন্তর ব্যাংকের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিকারী উপাদান।

১২. সঞ্চয় প্রবণতা (Savings Propensity):

পর্যাপ্ত পরিমাণ আয় থাকা সত্ত্বেও সঞ্চয়ের প্রবণতা থাকার কারণে প্রত্যাশিত পরিমাণ সঞ্চয় সংগ্রহ করতে ব্যাংক ব্যর্থ হয়। সুতরাং জনগণের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা বিদ্যমান থাকা ব্যাংকের জন্যে একটি অনুকূল পরিবেশ; আর সঞ্চয়ে উৎসাহহীনতা ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য প্রতিকূল পরিবেশ।

১৩. অর্থ বাজারে সহজ প্রবেশ (Easy Access into Money Market):

অর্থ বাজারে সহজ প্রবেশ ক্ষমতা বলতে যে কোন সময়ে যে কোন পরিমাণ প্রয়োজনীয় মুদ্রা অর্থ বাজার হতে সংগ্রহ করতে পারার অবস্থাকেই বুঝিয়ে থাকে। এ রকম অবস্থা বিদ্যমান না থাকলে ব্যাংক অব্যাহত গতিতে ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারে না। সুতরাং অর্থ বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার ব্যাংকের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ।

১৪. সরকারের ভূমিকা (Role of Govt.):

ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা মুখ্য। সরকার যদি ব্যবসায় বাণিজ্যকে উৎসাহিত করে তা হলে ব্যাংক ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। সরকার যদি শিল্প-বাণিজ্য ইত্যাদিকে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তা হলে ব্যাংক ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। যুগোপযোগী আইন প্রবর্তন করে সরকার ব্যাংক ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, বাংলাদেশে বিরাষ্ট্রীয়করণ এবং ব্যক্তিমালিকানা নীতি ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়াও ব্যাংকিং কোম্পানী আইন ও ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ আইন, ব্যাংক ব্যবসায়ের লভ্যাংশ বণ্টন নীতি ইত্যাদি অপেক্ষাকৃত কম কঠোর করে সরকার নতুন ব্যাংক স্থাপনে ও বিদ্যমান ব্যাংকের উন্নতি লাভ করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।

১৫. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা (Role of Central Bank):

কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের ব্যাংকের মুরুব্বী। তদুপরি দেশের সকল ব্যাংকের প্রধান হিসাবে এ ব্যাংক সরকারের প্রতিনিধির ভূমিকা পালন করে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গঠনমূলক নীতিমালা ব্যাংকের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে। আবার ব্যাংক ব্যবসায়ের কোন খাতকে নিরুৎসাহিতও করতে পারে। তাই ব্যাংকের পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বীকৃতি লাভ করেছে। নিজের বিষয়গুলো হতে এ সত্য স্বচ্ছভাবে প্রমাণ করা যায় –

(i) রিজার্ভ (Reserve Ratio):

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট ব্যাংক কর্তৃক রাখা রিজার্ভের অনুপাত বাড়িয়ে দিলে ব্যাংকের হাতে তহবিল কমে যায় এবং তা ব্যাংকের জন্যে একটি প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। আবার রিজার্ভের অনুপাত কমিয়ে দিলে তা ব্যাংকের হাতে ঋণ দানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ রিজার্ভ অনুপাত ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল।

(ii) নিকাশঘর House):

নিকাশ ঘরের উপস্থিতি ব্যাংকের আভ্যন্তরীণ লেনদেনকে ত্বড়িৎ নিষ্পত্তি করতে সহায়তা করে। ফলে ব্যাংকের দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়। নিকাশ ঘরের অনুপস্থিতিতে বা অদক্ষ নিকাশ বিদ্যমান থাকলে ব্যাংকের কার্যক্রমে গতিশীলতা হ্রাস পায়।

(iii) পুনঃ অর্থায়ন- (Refinancing):

পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা ব্যাংকের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকের নিজস্ব তহবিলের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সে পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ত্বড়িৎ গতিতে পুনঃ অর্থায়ন সুবিধা প্রদান করলে ব্যাংক দারুণ অর্থ সংকটে নিপতিত হয়। সুতরাং ব্যাংক ব্যবসায়ের সফলতার সঙ্গে পুনঃ অর্থায়ন ব্যবস্থা বিশেষভাবে জড়িত।

(iv) ঋণ সুবিধা (Loan Facility):

সংকটের সময় সহজ শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ প্রদানের মনোভাব ব্যাংকের জন্যে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। কিন্তু পর্যন্ত ঋণ সুবিধা প্রদানের নিশ্চয়তা না দিলে ব্যাংকসমূহকে তাদের নিজস্ব রিজার্ভের পরিমাণ বাড়াতে হয়। ফলে ব্যাংকসমূহ ঋণ ব্যবসায় হতে অধিকতর মুনাফা অর্জন করতে পারে

(v) তদারকী পরামর্শ দান (Supervision & Advising):

কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংকসমূহের কার্যক্রম তদারকি সময় সময় প্রয়োজনে পরামর্শ দান চূড়ান্ত বিচারে ব্যাংকসমূহের জন্যেই মঙ্গল বয়ে আনে। কারণ তদারকীর সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়ে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শ উপদেশের অভাবে অনেক সময় ব্যাংকসমূহ ভুল সিদ্ধান্ত ও ভুল কার্যক্রমের কারণে সফল হতে পারে না।

 

Japanese-Yen-Bank-Money-Free-Image-From-Pixabay.com

 

 

রাজনৈতিক উপাদান [ Political Factors ]

একটি দেশের রাজনৈতিক অবস্থা ব্যাংক ব্যবসায়ের ওপর নানাবিধ উপায়ে অনুকূল ও প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা অন্যান্য কারবারের মত ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্যেও প্রতিকূল। কারণ এহেন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সকল কার্যক্রম মন্থর হয়ে পড়ে। সুতরাং ব্যাংক ব্যবসায়েও মন্দাভাব দেখা দিয়ে থাকে। পক্ষান্তরে স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা অর্থনীতি তথা ব্যবসায়কে গতিশীল করে তোলে। যে সকল গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক উপাদান ব্যাংক ব্যবসায়ে প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে সেগুলো নিম্নরূপঃ

১. রাষ্ট্রীয় দর্শন (Ideology of the State):

রাষ্ট্রীয় দর্শন একটি দেশের ব্যাংক ব্যবসায়কে অস্তি প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করে থাকে। সমাজতান্ত্রিক দেশে সমস্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত বলে সেখানে প্রতিযোগিতামূলক ব্যাংক ব্যবসায় গড়ে উঠবার কোন সুযোগ থাকে না। পক্ষান্তরে বাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাসী পুঁজিবাদী রাষ্ট্র প্রতিযোগিতামূলক ব্যাংক ব্যবসায় গড়ে উঠবার সর্বোত্তম পরিবেশ। সেখানে সরকারীভাবেই ব্যক্তিমালিকানার সকল কারবারকে উৎসাহিত করা হয়। ফলে ব্যাংক ব্যবসায় সেখানে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করতে পারে।

আবার ইসলামী মতবাদে বিশ্বাসী কোন রাষ্ট্র ব্যাংক ব্যবসায়ের পূর্ণ অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান থাকলেও ব্যাংক ব্যবসায়ে সফলতা অর্জন করতে হলে ইসলামী রীতি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা দরকার। একটি দেশ সম্পূর্ণ ইসলামী মতবাদে উজ্জীবিত না হলে ইসলামী ব্যাংকের পরিবেশ অনুকূল হয় না। উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।

২. সরকারের মনোভাব (Attitude of the Govt.):

ব্যাংক ব্যবসায়ের পরিবেশ অনুকূল হবে কি প্রতিকূল হবে তা বহুলাংশে সরকারের মনোভাবের ওপর নির্ভর করে। সরকার যদি সত্যিকার অর্থে উন্নত ব্যাংক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আগ্রহী হন, তা হলে আইন প্রণয়ন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সে পরিবেশ গড়ে তুলতে পারেন। আবার ব্যাংক ব্যবসায়কে নিরুৎসাহিত করতে চাইলেও তা করতে সরকারের প্রতিকূল মনোভাবই যথেষ্ট।

৩. উন্নয়ন কার্যক্রম (Development Work):

সরকার যত বেশী উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেবেন, ব্যাংক ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য তা ততবেশী সহায়ক। কারণ এ সকল উন্নয়ন কার্যক্রম অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে গতিশীল করে তোলে, যা প্রকৃতপক্ষে ব্যাংক ব্যবসায়কেও গতিশীল করে তোলে। সরকারী ব্যয় জনসাধারণের আর উন্নয়ন কাজে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি পেলে জনগণের আয় তথা অর্থনৈতিক কর্মকাত বৃদ্ধি পাবে। ফলে একদিকে সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে অপরদিকে আমানতর বৃদ্ধি পাবে; অন্যদিকে ঋণের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে ব্যাংকের বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। ফলে অধিকতর লাভজনক কার্যক্রমের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

৪. ব্যবসায়ীদের প্রতি সমর্থন (Support to the Businessmen):

প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের সরকার কর্তৃক ব্যবসায়ীদের প্রতি সমর্থন তথা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহায়তাদান করা হলে পরোক্ষভাবে এ সমর্থন ব্যাংক ব্যবসায়ের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে।

 

Frankfurt, Germany, Free Photo from Pixabay

 

গ. সামাজিক-সাংস্কৃতিক উপাদান [ Socio-Cultural Factors ]

ব্যাংক ব্যবসায়ের ওপর প্রভাব সৃষ্টিকারী সামাজিক-সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল:

১. মূল্যবোধ (Values):

সামাজিক মূল্যবোধ নীতি-নৈতিকতার পরিচয় বহন করে। মুলাবোধের কারণে সত্যবাদিতা, ব্যবসায়িক সততা, অঙ্গীকার রক্ষা করা ইত্যাদি সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। যে সমাজে মূল্যবোধ যত উন্নত অন্য সমস্ত আর্থসামাজিক কার্যক্রমের মত ব্যাংকিং ব্যবসায়ের সফলতা অর্জন করার মত অনুকুল পরিবেশ সেখানে তত বেশি বিদ্যম।

২. নিরাপত্তা (Security):

সামাজিক নিরাপত্তা একজন নাগরিকের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনে। আর এ সুখ সাচ্ছন্দ্য ব্যতিরেকে ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে একজন নাগরিকের সম্পর্কিত হওয়া কল্পনা করা যায় না। সামাজিক নিরাপত্তা সকল প্রকার আর্থসামাজিক কর্মকান্ডের জন্যেই অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে। সুতরাং ব্যাংক ব্যবসায়ের সফলতার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা অত্যাবশ্যকীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে।

৩. ব্যবসায়ীর সামাজিক মর্যাদা (Social Status of the Businessman):

সমাজে একজন ব্যবসায়ী তার প্রাপ্ত মর্যাদা না পেলে ব্যবসার ক্ষেত্রে সে নিরুৎসাহিত হবে এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম হতে সে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিতে চাইবে। এ রকম পরিস্থিতি গোটা অর্থনৈতিক কার্যক্রমের জন্যেই বিপজ্জনক। সুতরাং ঐ সমাজে ব্যাংক ব্যবসায়ের উন্নতি সাধন প্রায় অসম্ভব। পক্ষান্তরে সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন ব্যবসায়ীগণ আরও অধিক উদ্দীপনার সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম হাতে নেবে, যা ব্যাংক ব্যবসায়কে গতিশীল করে তুলবে। ব্যাংকের মালিক ও কর্মচারীদের যে সমাজ অতিরিক্ত মর্যাদা দিয়ে থাকে, সে সমাজ এরূপ ব্যবসায়ের জন্য আদর্শ পরিবেশের অনুকূল হয়ে থাকে।

৪. শিক্ষা (Education):

যে কোন ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য শিক্ষা একটি অপরিহার্য শর্ত। অশিক্ষিত সমাজে ব্যাংক ব্যবসা সম্পর্কে মানুষের স্বচ্ছ ধারণা গড়ে ওঠে না। অপরদিকে শিক্ষিত সমাজে খুব সহজেই ব্যাংক ব্যবসায় তথা গোটা ব্যাংক ব্যবস্থার প্রপ্তি অনুকূপ মনোভাব গড়ে ওঠে। শিক্ষিত লোকগণ ব্যাংকমনা হয়ে থাকে অপরপক্ষে ব্যাংকের বিধি-বিধান ও প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে শিক্ষিত লোকগণই সহজে অনুধাবন করতে পারেন।

৫. সাংস্কৃতিক চেতনা (Cultural Consciousness):

যে সমাজে সাংস্কৃতিক চেতনা যতবেশী প্রখর এবং প্রাগসর, সে সমাজে ব্যাংক ব্যবসায়ের সফলতা ততবেশী আশাবাঞ্জক। প্রাচীন ব্যাবিলনীয় সভ্যতা এবং মেসোপটেমিয়ান সভ্যতায় ব্যাংক ব্যবসায়ের ইতিহাস তাই প্রমাণ করে।

৬. ব্যাংকিং অভ্যাস (Banking Habits):

ব্যাংকিং ব্যবসায়ের অগ্রগতি অনেকটা নির্ভর করে একটি সমাজের মানুষের মধ্যে ব্যাংক ব্যবসায় তথা ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হবার প্রবণতা এবং ব্যাংকিং অভ্যাসের ওপর। পর্যাপ্ত আয় এবং গৃহকেন্দ্রিক সঞ্চয় থাকা সত্ত্বেও ব্যাংকিং অভ্যাস না থাকলে ঐ সঞ্চয় ব্যাংকের ঘরে আসার সম্ভাবনা কম। ঠিক তেমনি লেনদেন প্রক্রিয়ায় ব্যাংক ব্যবহৃত না হলে ব্যাংকের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ব্যর্থ হতে বাধ্য। ব্যাংকিং অভ্যাসও এক ধরনের সংস্কৃতি। এটা একদিনে গড়ে উঠবার মত নয়। শিক্ষার মান, অর্থনৈতিক উন্নতি, আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজনীয়তা ও তদপুরি পরিশীলিত সাংস্কৃতিক মনা ব্যাংকিং অভ্যাস গড়ে ওঠার সহায়ক। সমাজের এই ধরনের গুনগত উন্নতি সাধন ব্যাংকিং ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে।

 

 

ঘ. আইনগত উপাদান (Legal Factors):

আইন সংক্রান্ত বিধি নিষেধ এবং আইনের ঘোষণায় প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাসমূহ ব্যাংকিং ব্যবসায়ের পরিবেশের উপাদান হিসেবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। নিয়ে আইনগত উপাদানগুলো সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ

১. কারবার নিয়ন্ত্রন আইন (Business Contral Laws):

সরকার আইনের মাধ্যমে সব ধরনের কারবারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সুতরাং আইনের ঘোষণায় কারবার সংগঠিত ও পরিচালিত করার ক্ষেত্রে কারবারের উন্নতি ও প্রসারের জন্য সহায়ক বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত থাকলে তা কারবারের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। তেমনি ব্যাংকিং ব্যবসায় সংক্রান্ত আইনসমূহও ব্যাংকিং ব্যবসায়ের সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ন্ত্রন করে থাকে। উদ্দীপনামূলক আইনের বিধানাবলী ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। অপরপক্ষে অতিরিক্ত সরকারী নিয়ন্ত্রনমূলক আইন পরিশেষে ব্যাংক ব্যবসায়সহ যে কোন কারবারী প্রতিষ্ঠানের জন্যেই প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে।

২. কর আইন-(Tax Laws):

কর আইনের দ্বিমুখী প্রভাব বিদ্যমান ব্যাংক সংক্রান্ত কর আইন এবং মক্কেলের সঙ্গে সম্পর্কিত কর আইন। ব্যাংকের মুনাফার ওপর বর্ধিত হারে করারোপ করা হলে ব্যাংক ব্যবসায় নিরুৎসাহিত হবে। অপরদিকে মক্কেলের সঞ্চয়ের ওপর কিংবা তার অন্যান্য মুনাফার ওপর করারোপ করা হলে তার সঞ্চয় প্রবণতা হ্রাস পাবে। যার ফলে ব্যাংক তহবিল সংকটে পতিত হবে। এক কথায় উৎসাহজনক কর সংক্রান্ত আইন অন্যান্য কারবারী প্রতিষ্ঠানের মত ব্যাংক ব্যবসায়ের জন্যেও অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে।

৩. আমদানী-রপ্তানী আইন (Import & Export Laws):

আমদানী ও রপ্তানীর ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণমূলক বা নিরুৎসাহব্যঞ্জক আইন প্রণয়ন করা হলে সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম মন্থর হয়ে পড়বে। ফলে ব্যাংক ব্যবসায়ের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

৪. রাজস্ব আইন-(Fiscal Laws):

সরকারের ঘোষিত এবং অনুসৃত রাজস্ব আইন ব্যাপক ভাবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড তথা ব্যাংক ব্যবসায়কে প্রভাবিত করে থাকে। এ আইনের আওতায় ব্যাংকের আয় ও ব্যয় নীতি প্রতিফলিত হয়ে থাকে। সরকারের ব্যয় কার্যক্রম দেশের গোটা অর্থনীতিতে প্রাণের সঞ্চার করে থাকে, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যাংকের সফলতা ত্বরান্বিত করে থাকে। পক্ষান্তরে সরকারের ব্যয় সংকোচন সংক্রান্ত আইন ও এর বিধানাবলী ব্যাংক ব্যবসায়ের প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকে।

 

 

প্রযুক্তিগত উপাদান [ Technological Factors ]

সামগ্রিকভাবে একটি দেশে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সংগঠিত হলে তার ইতিবাচক প্রভাব সর্বক্ষেত্রেই প্রতিফলিত হয়। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আধুনিকায়ন ত্বরান্বিত করে। আর আধুনিকায়ন উন্নত সেবা নিশ্চিত করে। ব্যাংক ব্যবসায়ে এ প্রযুক্তিগত উন্নতি বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। পুরনো কৌশলে মক্কেল সেবা প্রদান, অর্থ আদান-প্রদান ইত্যাদি আধুনিক প্রযুক্তিগত উন্নয়নের যুগে মক্কেলদের মনে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে।

উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে অধিকতর সেবা প্রদান করলে মক্কেলগণ ঐ ব্যাংকের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং প্রক্রিয়া একটি ব্যাংককে সফলতা অর্জনে উল্লেখযোগ্য সহায়তা ও উৎসাহ করে থাকে। প্রযুক্তি উন্নয়নের আরেকটি বিশেষ দিক রয়েছে। কোন দেশে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধিত হলে, সামাগ্রিকভাবে দেশের শিল্প-বাণিজ্য এমনকি কৃষি খামারেও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন বৃদ্ধি পায় বলতে সাধারণতঃ আয় স্তরের বুদ্ধিকেও বুঝায়।

আর আয় স্তর বৃদ্ধি পেলে জনগণের জীবনযাত্রার মানসহ সঞ্চয় সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এ বুদ্ধি প্রাপ্ত সঞ্চয়ই পর্যায়ক্রমে ব্যাংকের তহবিলে রূপান্তরিত হয়। সুতরাং সামগ্রিকভাবে ব্যাংক ব্যবসায়ের অগ্রগতির জন্য প্রযুক্তিগত উন্নয়ন একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আরও পড়ুন:

 

Leave a Comment