Site icon Banking Gurukul [ ব্যাংকিং গুরুকুল ] GOLN

ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ | এইচএসসি ব্যাংকিং ও বিমা

ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ

আজকের ক্লাসে আমরা আলোচনা করব “ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ” নিয়ে। এটি এইচএসসি পর্যায়ের ‘ব্যাংকিং ও বিমা’ (HSC Banking and Insurance) বিষয়ের ২য় পত্রের (2nd Paper) ১ম অধ্যায়। এই অধ্যায়টি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন প্রকার ব্যাংকের কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

 

ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ

কাঠামো, মালিকানা, গঠন, নিবন্ধন, অঞ্চল ও নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে ব্যাংকিং ব্যবসাকে নিম্নলিখিত ৯.২ নং ছক অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যাস করা যায়:

ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিকরণ:

ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন শ্রেণির ব্যাংক বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ও কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। অর্থনৈতিক চাহিদা ও আর্থসামাজিক কাঠামোর ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাংকগুলোর একটি কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। নিচে এগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:

১) কেন্দ্রীয় ব্যাংক (Central Bank)

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো একটি দেশের সর্বোচ্চ আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যা দেশের মুদ্রা ব্যাংকিং ব্যবস্থার অভিভাবক হিসেবে কাজ করে। এটি সরকারের আর্থিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে এবং দেশের মুদ্রানীতি প্রণয়ন, মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার নির্ধারণ, মুদ্রা সরবরাহ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখ্য দায়িত্বসমূহ:

১. মুদ্রা ইস্যু নিয়ন্ত্রণ: দেশীয় মুদ্রার জারি ও সরবরাহের একমাত্র কর্তৃত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে থাকে।
২. মুদ্রানীতি প্রণয়ন বাস্তবায়ন: সুদের হার, মুদ্রাস্ফীতি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে মুদ্রানীতি নির্ধারণ করে।
৩. অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা: জিডিপি, বিনিয়োগ ও মূল্যস্ফীতির ভারসাম্য বজায় রাখতে কাজ করে।
৪. বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের তদারকি নিয়ন্ত্রণ: ব্যাংক লাইসেন্স প্রদান, ঋণনীতি নির্ধারণ এবং রেগুলেটরি মান বজায় রাখা।
৫. বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষণ বৈদেশিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণ: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা রক্ষা করে।
৬. সরকারের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করা: সরকারের পক্ষ থেকে রাজস্ব লেনদেন, ঋণ ব্যবস্থা ও বাজেট পরিচালনায় সহযোগিতা প্রদান।

বিশেষ বৈশিষ্ট্য:

উদাহরণ:

 

২) বাণিজ্যিক ব্যাংক (Commercial Bank)

বাণিজ্যিক ব্যাংক হচ্ছে এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা মূলত লাভ অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়। এই ব্যাংক জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে এবং সেই আমানতকে বিভিন্ন খাতে ঋণ হিসেবে প্রদান করে থাকে। এর মাধ্যমে তারা একদিকে জনগণের সঞ্চয় সংরক্ষণ করে, অন্যদিকে ব্যবসা, শিল্প, কৃষি, শিক্ষা ও ব্যক্তি পর্যায়ে আর্থিক চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক মূলত সংক্ষিপ্ত মধ্যম মেয়াদি ঋণ প্রদান করে এবং দৈনন্দিন ব্যাংকিং লেনদেনে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। আধুনিক বাণিজ্যিক ব্যাংক শুধুমাত্র ঋণ ও আমানত নয়, বরং চেক সুবিধা, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড, অনলাইন ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, এল.সি. (Letter of Credit), রেমিট্যান্স সেবা ইত্যাদি প্রদান করে থাকে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলি:

বাণিজ্যিক ব্যাংকের শ্রেণিবিন্যাস:

উদাহরণ:

 

৩) কৃষি ব্যাংক (Agricultural Bank)

কৃষি ব্যাংক হলো সেই ব্যাংক, যা কৃষিখাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ ধরনের ব্যাংক কৃষিজমি উন্নয়ন, বীজ, সার, সেচ, কৃষিযন্ত্র, গবাদিপশু পালন, মৎস্য চাষ, পোলট্রি, বনায়ন ইত্যাদি খাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ প্রদান করে থাকে

বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ, যেখানে গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র কৃষি খাত। ফলে কৃষকের উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখতে এবং কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা অপরিসীম

কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যক্রম:

বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংক:

???? বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (Bangladesh Krishi Bank – BKB)
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংক, যা ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে— ‘কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে সার্বিক ব্যাংকিং সহায়তা প্রদান’

???? বিশেষ তথ্য:
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখাগুলোর প্রায় ৯০% গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত, যা গ্রামীণ কৃষকের জন্য সহজলভ্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করে।

৪) শিল্প ব্যাংক (Industrial Bank)

শিল্প ব্যাংক হলো একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা দেশের উদীয়মান (emerging) বিদ্যমান (existing) শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। শিল্প খাতের সম্প্রসারণ ও শিল্পায়নের গতি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এই ব্যাংকগুলো কাজ করে থাকে।

✅ শিল্প ব্যাংকের প্রধান কার্যাবলি:

✅ শিল্প ব্যাংকের গুরুত্ব:

✅ উদাহরণ (বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট):

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (BDBL)

 

৫) সমবায় ব্যাংক (Co-operative Bank)

সমবায় ব্যাংক হলো একটি সদস্যভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা সমবায় নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, সঞ্চয়কে উৎসাহিত করা এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা। এটি মূলত লাভ নয়, বরং সদস্যদের কল্যাণকেই প্রধান লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করে।

???? মূল বৈশিষ্ট্য:

???? প্রধান কার্যক্রম:

  1. সদস্যদের সঞ্চয় গ্রহণ করা
  2. সহজ সুদে ঋণ প্রদান – যেমন: কৃষিঋণ, গৃহঋণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণ ইত্যাদি
  3. আর্থিক পরামর্শ প্রশিক্ষণ প্রদান
  4. সমবায় আন্দোলনের প্রসারে ভূমিকা পালন

???? বাংলাদেশে সমবায় ব্যাংক:

বাংলাদেশে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড (Bangladesh Co-operative Bank Ltd.) একটি স্বীকৃত সমবায় ব্যাংক, যা সমবায় সমিতি সদস্যদের আর্থিক চাহিদা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে।

৬) বিনিয়োগ ব্যাংক (Investment Bank)

এই ব্যাংকগুলো শেয়ার, ডিবেঞ্চার ইস্যু, অবলেখক (underwriting), ব্রিজ ফিনান্সিং এবং উদ্যোক্তাদের আর্থিক পরিকল্পনা পরামর্শ দিয়ে থাকে।
এগুলো সাধারণত ব্যবসা শিল্প খাতের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক চাহিদা পূরণে বিশেষায়িত।

৭) সঞ্চয়ী ব্যাংক (Savings Bank)

বিনিয়োগ ব্যাংক হলো একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা প্রধানত ব্যবসা ও শিল্প খাতের মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এই ব্যাংকগুলো সাধারণত আমানত গ্রহণ করে না; বরং বিনিয়োগমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, আর্থিক পরিকল্পনা ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে।

বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রধান কাজসমূহ:

১। ✅ শেয়ার ও ডিবেঞ্চার ইস্যু করা – কোম্পানির পুঁজির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে নতুন শেয়ার ও ডিবেঞ্চার বাজারে ছাড়ার প্রক্রিয়া সম্পাদন করে।

২। ✅ অবলেখক (Underwriting) হিসেবে কাজ করা – শেয়ার বা ডিবেঞ্চার বাজারে পুরোপুরি বিক্রি না হলে অবশিষ্ট অংশ নিজ দায়িত্বে গ্রহণ করে অর্থ সংগ্রহ নিশ্চিত করে।

৩। ✅ ব্রিজ ফিনান্সিং প্রদান – স্বল্পমেয়াদি অর্থঘাটতি মোকাবেলায় অস্থায়ী ঋণ বা সেতু ঋণ প্রদান করে, যা পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের মাধ্যমে পরিশোধযোগ্য।

৪। ✅ বিনিয়োগ ও আর্থিক পরামর্শ প্রদান – নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ, মূলধন গঠন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, একীভবন (Merger) ও অধিগ্রহণ (Acquisition) ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিষ্ঠানসমূহকে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

৫। ✅ মূলধন পুনর্গঠন ও কর্পোরেট পুনর্বিন্যাসে সহায়তা – ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে তাদের আর্থিক কাঠামোকে আরও দক্ষ ও লাভজনক করে তুলতে সাহায্য করে।

বিনিয়োগ ব্যাংকের গুরুত্ব:

উদাহরণ: বাংলাদেশে আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট, ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে।

৮) বন্ধকি ব্যাংক (Mortgage Bank)

বন্ধকি ব্যাংক হলো একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা ভূমি, ভবন, জমি বা সম্পত্তি বন্ধক রেখে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রদান করে। এই ধরনের ব্যাংক সাধারণত কৃষি, আবাসন, নির্মাণ, শিল্প, হাউজিং প্রকল্প এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক কাজের জন্য অর্থায়ন করে

???? মূল বৈশিষ্ট্য:

???? ঋণ গ্রহণের শর্তাবলি:

???? বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে:

বাংলাদেশে আবাসন খাতে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে বন্ধকি ব্যাংকের ভূমিকা ক্রমশ বাড়ছে। যেমন:

???? বন্ধকি ব্যাংকের উপকারিতা:

 

৯) পরিবহন ব্যাংক (Transport Bank)

পরিবহন ব্যাংক হচ্ছে একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা দেশের পরিবহন খাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ব্যাংকের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ, যানবাহনের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং পরিবহন ব্যবসায় উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা।

প্রধান কার্যাবলি:

অর্থনৈতিক গুরুত্ব:

পরিবহন ব্যাংক মূলত দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে দেশের সড়ক, নৌ, রেল ও বিমান পরিবহন ব্যবস্থাকে টেকসই ও আধুনিক করার লক্ষ্যে কাজ করে। এটি একটি বিকাশমান খাত, যেখানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণও বাড়ছে।

১০) ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ব্যাংক (Small and Cottage Industries Bank)

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যাংক এমন একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যা দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী উদ্যোক্তা, যুবক ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে। এ ব্যাংক মূলত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিনিয়োগ, পরামর্শ, প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে দেশের শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

???? প্রধান কার্যাবলি:

  1. ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহজ ঋণ সুবিধা প্রদান।

  2. নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে বিশেষ ঋণ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন।

  3. শিল্প স্থাপন ও পরিচালনা সংক্রান্ত পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা প্রদান।

  4. স্বল্পসুদে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে উদ্যোক্তাদের ব্যবসা শুরু বা সম্প্রসারণে সহায়তা করা।

  5. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা।

  6. গ্রামীণ শিল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিকে গতিশীল করা

???? প্রাতিষ্ঠানিক উদাহরণ:

১১) আমদানিরপ্তানি ব্যাংক (Import-Export Bank)

আমদানি-রপ্তানি ব্যাংক এমন একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ব্যাংক আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের বৈদেশিক লেনদেন সংক্রান্ত সকল প্রকার আর্থিক, প্রযুক্তিগত ও পরামর্শমূলক সেবা প্রদান করে থাকে।

মূল কার্যাবলি:

  1. এল.সি. (Letter of Credit) ইস্যু ব্যবস্থাপনা
    আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে নিরাপদ লেনদেনের জন্য এল.সি. ইস্যু করে। এল.সি. র মাধ্যমে রপ্তানিকারক নিশ্চিত থাকে যে, নির্ধারিত শর্ত পূরণ হলে সে অর্থ পাবে।
  2. বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন
    বিভিন্ন মুদ্রায় লেনদেন পরিচালনার সুবিধা প্রদান করে, যেমন: মুদ্রা রূপান্তর, ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ফরোয়ার্ড এক্সচেঞ্জ কনট্রাক্ট ইত্যাদি।
  3. আমদানি রপ্তানি ঋণ প্রদান
    আমদানি পণ্যের মূল্য পরিশোধ ও রপ্তানি কার্যক্রম চালানোর জন্য স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়।
  4. রপ্তানি উন্নয়ন সহায়তা
    পণ্যের মান উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ, এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সহায়তা প্রদান করে।
  5. বাণিজ্য সংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান
    আন্তর্জাতিক বাজার, শুল্কনীতি, বাণিজ্য চুক্তি ইত্যাদি বিষয়ে গ্রাহকদের গাইড করে।

বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য আমদানিরপ্তানি ব্যাংক:

কার্যভিত্তিক শ্রেণিকরণে গুরুত্ব:

ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস অর্থনীতির প্রতিটি খাতে নির্দিষ্ট আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাঠামো তৈরি করে।
আমদানি-রপ্তানি ব্যাংক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তাদের উপযোগী আর্থিক সমাধান প্রদান করে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এবং অর্থনীতিকে বৈশ্বিক বাণিজ্যের সাথে সংযুক্ত করতে সহায়তা করে।

এভাবে, কার্যভিত্তিক শ্রেণিকরণ ব্যাংকিং ব্যবস্থার পেশাদারিত্ব, দক্ষতা এবং খাতভিত্তিক প্রয়োজন পূরণের দিকটি সুস্পষ্ট করে তোলে।

কার্যভিত্তিক শ্রেণিকরণ ব্যাংকের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিশেষায়ন বুঝতে সহায়তা করে। এটি অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নিশ্চিত করে এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

 

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

ব্যাংকের কার্যভিত্তিক শ্রেণিবিভাগ নিয়ে বিস্তারিত :

 

Exit mobile version