ব্যাংক পুঁজির কার্যাবলী [ Functions of Bank Capital ] নিয়ে আজকের আলোচনা। ব্যাংক ব্যবসার পুঁজির কার্যাবলী অপরিসীম। ব্যাংকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুঁজি ছাড়া চিন্তাই করা হয় না।
Table of Contents
ব্যাংক পুঁজির কার্যাবলী [ Functions of Bank Capital ]
নিম্নে ব্যাংকের পুঁজির কার্যাবলী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে বলা হলঃ
১। ব্যাংকের ভৌতিক সুবিধাদি সৃষ্টিকরণ (To Acquire the Physical Plant and Basic Necessition Needed to Render Banking Services)
কোন কোন ব্যাংক ব্যবসায় শুরু করতে তার ভৌতিক অবকাঠামো যেমনঃ অফিস, যন্ত্রপাতি, আসবাবপ প্রয়োজনীয় জনশক্তি প্রয়োজন। এ সমস্ত কার্যাবলী সম্পাদনে মূলধন একান্তভাবে আবশ্যক। দেখা যায় যে ব্যাংক যতবেশী মূলধন নিয়ে ব্যাংক ব্যবসায় শুরু করে তথা আকর্ষণীয় বহুতল বিশিষ্ট অফিসের ব্যবস্থা করে সে ব্যাংকের প্রতি তত বেশী আমানতকারী ভিড় জমায়।
২। বিনিয়োগ ও ঋণের একটি উৎস হিসাবে কাজ করা (To Act One of the Sources of Funds for Loans and Investment )
ব্যাংকের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিনিয়োগ ও ঋণ কার্য সম্পাদন করতে হয়। সেক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। মূলধনের মাধ্যমে উক্ত ঋণ ও বিনিয়োগ চাহিদা মিটিয়ে থাকে। যদিও আমানতকারীর দিয়েই বেশীরভাগ ঋণ ও বিনিয়োগ সংগঠিত হয়। তথাপি সময়ে সময়ে বিশেষ করে ব্যাংক ব্যবসা পর্যায়ে ব্যাংক মূলধনের মাধ্যমে এ কার্যের সম্পাদন করে।
৩। বীমাকৃত নয় এমন আমানত নিরাপদ রাখা (To Protect the Uninsured Depositors in the Event Insolvency and Liquidation)
বর্তমানে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ব্যাংকে রক্ষিত আমানতকৃত অর্থ যাতে কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে সেজন্য আমানতকৃত অর্থের বীমার নির্দেশ দিয়েছে। কোন কোন ব্যাংকের আমানতকৃত অর্থ যদি বীমাকরণ না করা হয় এবং উক্ত ব্যাংক যদি দেউলিয়াত্ব বা পরিচালনায় ব্যর্থ হয় তাহলে আমানতি অর্থ ব্যাংক পুঁজি হতে সরবরাহ করা হয়।
৪। অভাবনীয় ও অচিন্তনীয় ক্ষতি নিবারণ (To act as an Unanticipated Loss Absorber)
যে কোন সময় বিপদ আপদ তথা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং সমূহ বিপদে যথেষ্ট অর্থের ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষতি হতে উৎরানোর জন্য পুঁজির প্রয়োজন। অনেক সময় লক্ষ্য করা যায় কুঋণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অসদাচরণ, অফিসে আগুন লেগে যাওয়া ইত্যাদি কারণে ব্যাংকের অভাবনীয় বা অচিন্তনীয় ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষতিকে নিবারণ করতে ব্যাংকের পুঁজি সহযোগিতা করে।
৫। বিধিবন্ধ নির্দেশনা অনুসরণ (To Serve as a Regulatory Restraint)
সরকার তথা ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের পুঁজির ব্যবহার ও সংরক্ষিত পুঁজির পরিমানের নির্দেশন করেন। সময়ে সময়ে ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের পুঁজি পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেন। এবং মোতাবেক তহবিল সংরক্ষণে ব্যর্থ হয় তাহলে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও আর্থিক শান্তির বাং করা হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকের পুঁজির যথেষ্টতায় এ সমস্যা থেকে উৎরানো সম্ভব। আইন অনুযায়ী মোট পুঁজি মোট ভারযুক্ত ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের ৮ ভাগের কম হলে চলবেনা এবং মালিকের পুঁজি কোনক্রমে মোট ভাবতে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের ৪ ভাগের কম হলে চলবে না। অর্থাৎ মোট পুঁজির অর্ধেকের কম হলে কোন কলে চলবেনা এ আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে চলাও ব্যাংকের কাজ।
উপরোক্ত আলোচনা হতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ব্যাংকের পুঁজি বা মূলধন একটি অন্যতম প্রধান উপাদান এবং সময় স্থান আইন ভেদে এর কার্যকরীতা অপরিসীম। কোন ব্যাংকের গোড়াপত্তন প্রাথমিক অবস্থা থেকে তার পরিসমাপ্তী পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুঁজির / মূলধন কার্যকারিতা ব্যাপক।
আরও পড়ুনঃ
- ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সূচিপত্র
- পুঁজি সংগ্রহের দলিলাদী বা ঋণপত্র [ Instruments of Raising Bank Capital ]
- আধুনিক বৈদ্যুতিক ব্যাংকিং প্রযুক্তি সমূহ [ Modern Electronic Banking Technology ]
- পুঁজির প্রকার ভেদ [ Types of Capital ]
- বিশেষ ধরণের আমানত প্রকল্প সমূহ [ Special Types of Deposit Schemes ]