Site icon Banking Gurukul [ ব্যাংকিং গুরুকুল ] GOLN

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস | এইচএসসি ব্যাংকিং ও বিমা

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি

আজকের ক্লাসে আমরা আলোচনা করব “আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস” সম্পর্কে, যা ১ম অধ্যায় (Chapter 1) হিসেবে এইচএসসি ব্যাংকিং ও বিমা (HSC Banking and Insurance) পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। এই অধ্যায়টি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্র (2nd Paper)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এই অধ্যায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সূচনা, ধাপে ধাপে তার উন্নয়ন এবং বর্তমান বৈশ্বিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিবর্তনের একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা লাভ করবে।

 

Table of Contents

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস

 

 

প্রাচীন ভারতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ইতিহাস

ব্যাংকিংয়ের প্রাচীন ইতিহাস:

খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাংকিং কার্যক্রমের কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও, ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক আর্থিক সহায়তার চর্চা ছিল বলেই জানা যায়। এ সময় ধনিক শ্রেণি তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ পিতলের কলস বা পাতিলে ভরে মাটির নিচে পুঁতে রাখত এবং স্বর্ণ বা রৌপ্য পাত্রের গায়ে আর্থিক হিসাব লিখে রাখার রীতি ছিল।

ব্যাংকিং ধারণার সূচনা:

তৎকালীন সমাজে ব্যাংকিং ব্যবসার আনুষ্ঠানিক রূপ না থাকলেও ঋণগ্রহণ, সুদ প্রদান ও আর্থিক লেনদেনের ধারণা মানুষ জানত। ঋণ সুদ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা সেই সময়কার জনগণের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।

ঋণ ব্যবস্থা বৈদিক যুগেও:

বৈদিক আমলেও ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের রীতি প্রচলিত ছিল। প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ-এ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই সময় মন্দির উপাসনালয় ছিল ব্যাংক কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল।

মনুসংহিতা কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে ব্যাংকিং:

স্যার রিচার্ড টেম্পলের অভিমত:

ইতিহাসবিদ স্যার রিচার্ড টেম্পলের মতে, প্রাচীন ভারতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল, যদিও তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল না।

 

মুগল আমলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিকাশ

স্বর্ণমুদ্রা অর্থ ব্যবসা:

মুগল আমলে বিভিন্ন মূল্যের স্বর্ণমুদ্রা প্রচলিত ছিল, যা অর্থ ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করে। এ সময় স্থানীয় কিছু পরিবার অর্থ ব্যবসায়ে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।

জগৎশেঠ পরিবারের অবদান:

টাকশাল হুন্ডির ব্যবহার:

সরকারি রাজস্ব সংগ্রহ ব্যাঙ্কের ভূমিকা:

বিভিন্ন স্তরের ব্যাংকার:

মুগল আমলে সমাজে বৃহৎ পুঁজিপতি থেকে শুরু করে গ্রাম্য মহাজন পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের মানুষ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করত।

 

আধুনিক ব্যাংকিংয়ের সূচনা:

 

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমন ও ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকিং ব্যবস্থার পতন

১৭৫৭ সালের প্লাসি যুদ্ধ এবং ১৭৬৫ সালে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে জগৎশেঠসহ তৎকালীন অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকারদের অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকে। তাদের আর্থিক ক্ষমতা এবং প্রভাব-প্রতিপত্তি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। ইংরেজদের সহযোগী মীরজাফর ও তার অনুসারীদের সহায়তায় জগৎশেঠ পরিবারের ঐতিহাসিক ব্যাংক ব্যবসা দ্রুত ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়।

 

আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সূচনা

ঐ সময়ে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্যের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে ইংরেজরা ইংলিশ এজেন্সি হাউস প্রতিষ্ঠা করে। এরপর, ১৭৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল ব্যাংক ব্রিটিশ ভারতে প্রথম আধুনিক ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পায়।

 

বাংলাদেশে আধুনিক ব্যাংকিংয়ের প্রাথমিক পর্যায়

প্রেসিডেন্সি ব্যাংক ও রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা

ব্যাংকের নাম প্রতিষ্ঠার সাল
ব্যাংক অব ক্যালকাটা ১৮০৬
ব্যাংক অব বোম্বে ১৮৪০
ব্যাংক অব মাদ্রাজ ১৮৪৩
দি ইম্পেরিয়াল ব্যাংক ১৯২১ (সমন্বয়ে)
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ১৯৩৫

লোন অফিস ও স্থানীয় ব্যাংকসমূহের বিস্তার (বাংলাদেশ অঞ্চলে)

লোন অফিসের অবস্থান ও বছর

জেলা/উপজেলা প্রতিষ্ঠার সাল
ফরিদপুর ১৮৬৫
বগুড়া ১৮৭২
বরিশাল ১৮৭৩
ময়মনসিংহ ১৮৭৩
নাসিরাবাদ ১৮৭৫
যশোর ১৮৭৬
মুন্সিগঞ্জ ১৮৭৬
ঢাকা ১৮৭৮
সিলেট ১৮৮১
পাবনা ১৮৮২
কিশোরগঞ্জ ১৮৮৩
নোয়াখালী ১৮৮৫
খুলনা ১৮৮৭
মাদারীপুর ১৮৮৭
টাঙ্গাইল ১৮৮৭
নীলফামারী ১৮৯৪
রংপুর ১৮৯৪

স্থানীয় ব্যাংকসমূহ

ব্যাংকের নাম প্রতিষ্ঠার সাল
কুড়িগ্রাম ব্যাংক ১৮৮৭
কুমারখালী ব্যাংক ১৮৯৬
মহালক্ষ্মী ব্যাংক অজ্ঞাত
চট্টগ্রাম ব্যাংক ১৯১০
দিনাজপুর ব্যাংক ১৯১৪
কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশন ১৯১৪
কুমিল্লা ইউনিয়ন ব্যাংক ১৯২২

ভারতীয় ব্যাংক যাদের বাংলাদেশে শাখা ছিল

ব্যাংকের নাম প্রতিষ্ঠার সাল
ন্যাশনাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ১৮৬৪
বেঙ্গল সেন্ট্রাল ব্যাংক ১৯১৮
নিউ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১৯২০
ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ১৯২১
হাবিব ব্যাংক ১৯৪১
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লি. ১৯৪২

পাকিস্তান আমলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ধারা

১৯৫৯–১৯৬৫ সময়ে বাংলাদেশে কার্যরত পাকিস্তানি ব্যাংক

ব্যাংকের নাম
দি ইউনাইটেড ব্যাংক
ইউনিয়ন ব্যাংক
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
কমার্স ব্যাংক

পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব ব্যাংক (প্রধান কার্যালয় ঢাকায়)

ব্যাংকের নাম প্রতিষ্ঠার সাল বর্তমান নাম
ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড ১৯৫৯ পূবালী ব্যাংক লিমিটেড
ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড ১৯৬৫ উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড

ব্যাংক শাখার সংখ্যা পরিবর্তনের ধারা

বছর শাখার সংখ্যা
১৯০১ ২৫টি
১৯৪৬ ৬৬৮টি
১৯৫০ ১৪৮টি
১৯৬৫ ৫৪৫টি
১৯৭০ ১,০৭৫টি

 

 

 

আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থার গঠন ও বিকাশ

ব্যাংকিং কার্যক্রমের সূচনা (১৯৭১ পরবর্তীকাল)

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর পাকিস্তান হতে ১,১৩০টি ব্যাংক শাখা উত্তরাধিকারসূত্রে পায়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারের প্রথম পদক্ষেপ ছিল:

 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন

পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত ১০টি পাকিস্তানি ব্যাংক এবং পূর্বেই প্রতিষ্ঠিত ২টি বাংলাদেশি ব্যাংক একত্র করে ৬টি নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গঠন করা হয়। নিচের ছকে পূর্বতন ব্যাংকগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ব্যাংকসমূহের বিবরণ দেওয়া হলো:

নতুন ব্যাংকের নাম একত্রীকৃত ব্যাংকসমূহ
সোনালী ব্যাংক দ্য ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, দ্য ব্যাংক অব বাহাওয়ালপুর, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংক হাবিব ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক
জনতা ব্যাংক দ্য ইউনাইটেড ব্যাংক, দ্য ইউনিয়ন ব্যাংক
রূপালী ব্যাংক দ্য মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক, দ্য স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
পূবালী ব্যাংক দ্য অস্ট্রেলেশিয়া ব্যাংক, দ্য ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক
উত্তরা ব্যাংক দ্য ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন

 

বাংলাদেশ ব্যাংক: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা ও কাঠামো

প্রতিষ্ঠা ও দায়িত্ব

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী। এটি পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান-এর ঢাকা ডেপুটি গভর্নর অফিস থেকে রূপান্তরিত হয় এবং দেশের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করে।

মূল দায়িত্বসমূহ:

 

কাঠামোগত বিবরণ

বিষয় বিবরণ
মূলধন ৩ কোটি টাকা
শেয়ার সংখ্যা ৩ লক্ষ শেয়ার (প্রতিটি ১০০ টাকা করে)
মালিকানা বাংলাদেশ সরকার (সম্পূর্ণ)
আইনি অবস্থা সরকার মালিকানাধীন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান
পরিচালনা পর্ষদ ৯ সদস্যবিশিষ্ট বোর্ড দ্বারা পরিচালিত

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯টি আঞ্চলিক শাখা অফিস রয়েছে, যেগুলো নিম্নরূপ:

 

এইভাবে স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে একটি নতুন রাষ্ট্রভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, যার কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং যার লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ আর্থিক কাঠামো গঠন করা।

 

 

 

বাংলাদেশে কার্যরত ব্যাংকসমূহের শ্রেণিবিন্যাস ও গঠন

বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থা বহুবিধ শ্রেণিতে বিভক্ত, যা কার্যপ্রণালি, মালিকানা ও উদ্দেশ্য অনুসারে শ্রেণিকরণ করা যায়।

 

১. শাখা ভিত্তিক ব্যাংকিং কাঠামো

বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক শাখাভিত্তিক ব্যাংক, যাদের নিজস্ব সত্তা নেই। এরা তাদের প্রধান কার্যালয়ের অধীন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিদেশেও শাখা স্থাপন করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে।

 

২. ব্যাংক স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো

বাংলাদেশে যে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি ব্যাংক স্থাপন করতে চায়, তাদেরকে অবশ্যই নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:

ধাপ বিবরণ
কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ অনুযায়ী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন
রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ থেকে Certificate of Incorporation সংগ্রহ
শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (BSEC) এর অনুমোদন

 

৩. মালিকানাভিত্তিক ব্যাংকের শ্রেণিবিন্যাস

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে নিচের মালিকানার ভিত্তিতে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়:

শ্রেণি ব্যাখ্যা
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সরকার মালিকানাধীন
বেসরকারি ব্যাংক ব্যক্তিমালিকানাধীন বা কর্পোরেট মালিকানাধীন
স্বায়ত্তশাসিত ব্যাংক সরকারের মালিকানায় চললেও পরিচালনায় স্বায়ত্তশাসন
বিদেশি ব্যাংক বিদেশি মালিকানাধীন ও পরিচালিত
মিশ্র মালিকানার ব্যাংক সরকার ও বেসরকারি উভয়ের যৌথ মালিকানাধীন

 

৪. রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসমূহ

বর্তমানে বাংলাদেশে তিনটি পুরোপুরি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক রয়েছে এবং তিনটি পূর্বে রাষ্ট্রায়ত্ত থাকলেও এখন বেসরকারিকরণ হয়েছে।

ব্যাংকের নাম অবস্থা মন্তব্য
সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পূর্ণরূপে সরকারি মালিকানাধীন
জনতা ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পূর্ণরূপে সরকারি মালিকানাধীন
অগ্রণী ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পূর্ণরূপে সরকারি মালিকানাধীন
রূপালী ব্যাংক মিশ্র মালিকানা ৫১% সরকারি, ৪৯% পাবলিক শেয়ার
উত্তরা ব্যাংক বেসরকারিকরণ (১৯৮৩) সম্পূর্ণ ব্যক্তিমালিকানাধীন
পূবালী ব্যাংক বেসরকারিকরণ (১৯৮৬) সম্পূর্ণ ব্যক্তিমালিকানাধীন

 

৫. বেসরকারি ব্যাংকসমূহ (প্রতিষ্ঠা সালসহ)

নিচের টেবিলে দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকসমূহকে প্রতিষ্ঠার সাল অনুযায়ী সাজানো হয়েছে:

ব্যাংকের নাম প্রতিষ্ঠার সাল মন্তব্য
উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড ১৯৭২ (১৯৮৩ সালে বেসরকারিকরণ) প্রাক্তন রাষ্ট্রায়ত্ত
পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ১৯৭২ (১৯৮৬ সালে বেসরকারিকরণ) প্রাক্তন রাষ্ট্রায়ত্ত
আইএফআইসি ব্যাংক ১৯৭৬
ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ ১৯৮৩
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ১৯৮৩
দ্য সিটি ব্যাংক ১৯৮৩
ন্যাশনাল ব্যাংক ১৯৮৩
আরব-বাংলাদেশ ব্যাংক ১৯৮৫
ইস্টার্ন ব্যাংক ১৯৯২
এনসিসি ব্যাংক ১৯৯৩
প্রাইম ব্যাংক ১৯৯৫
সাউথইস্ট ব্যাংক ১৯৯৫
ঢাকা ব্যাংক ১৯৯৫
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ১৯৯৫
সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক ১৯৯৫
ডাচ-বাংলা ব্যাংক ১৯৯৬
প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৯৯৯
মার্কেন্টাইল ব্যাংক ১৯৯৯
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ১৯৯৯
ওয়ান ব্যাংক ১৯৯৯
এক্সিম ব্যাংক ১৯৯৯
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ১৯৯৯
মিচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১৯৯৯
ট্রাস্ট ব্যাংক ১৯৯৯
ব্যাংক এশিয়া ১৯৯৯
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ১৯৯৯
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২০০১
যমুনা ব্যাংক ২০০১
ব্র্যাক ব্যাংক ২০০১
আইসিবি ইসলামী ব্যাংক পূর্বতন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক

 

৬. বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহ

বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক খাতকে লক্ষ্য করে গঠিত, যেগুলোকে বিশেষায়িত ব্যাংক বলা হয়।

ব্যাংকের নাম প্রতিষ্ঠা সাল উদ্দেশ্য
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ১৯৭৩ কৃষিখাতে অর্থায়ন
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১৯৮৭ কৃষি উন্নয়ন
বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ১৯৭২ শিল্পখাতে অর্থায়ন
কর্মসংস্থান ব্যাংক ১৯৯৭ আত্ম-কর্মসংস্থান সহায়তা
সমবায় ব্যাংক ১৯৪৮ সমবায়ীদের ঋণ ও সঞ্চয় বৃদ্ধি
বেসিক ব্যাংক লিমিটেড ১৯৯২ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অর্থায়ন
শিল্প ঋণ সংস্থা (পরবর্তীকালে বিডিবিএল) ১৯৭২ (২০১০ সালে রূপান্তরিত) দীর্ঘমেয়াদি শিল্প অর্থায়ন

বর্তমানে দেশে বিশেষায়িত ব্যাংকের সংখ্যা মোট ৪টি।

 

 

বিদেশি ব্যাংকসমূহ

বাংলাদেশে বর্তমানে বেশ কয়েকটি বিদেশি ব্যাংক তাদের শাখা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এগুলো মূলত আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর এক্সটেনশন হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করে থাকে এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

বিদেশি ব্যাংকসমূহ ও বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর সাল

ব্যাংকের নাম বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর সাল
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক
স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ১৯৭৬
দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন (HSBC) ১৯৯২
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ১৯৯৫
সিটি ব্যাংক এন.এ ১৯৯৫
হাবিব ব্যাংক লিমিটেড ১৯৯৭
কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলোন লিমিটেড ২০০৩
ব্যাংক আল-ফালাহ ২০০৫
উরি ব্যাংক (দক্ষিণ কোরিয়া) ১৯৯৬

বিগত একীকরণ পরিবর্তন:

বর্তমান হিসাব অনুযায়ী (২০১০ সালের মধ্যে), বাংলাদেশে ৯টি বিদেশি ব্যাংক সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ ব্যাংকিং

বাংলাদেশে বর্তমানে কোন স্বতন্ত্র মার্চেন্ট ব্যাংক বা বিনিয়য় ব্যাংক (Investment Bank) নেই। তবে কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক সীমিত আকারে মার্চেন্ট ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে থাকে।

বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন ও অনুমোদিত ডিলার

ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৭ অনুসারে, রাষ্ট্রায়ত্ত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখাকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য অনুমোদিত ডিলার (Authorized Dealer) হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাত: শ্রেণীবিভাগ, আমানত-ঋণ ও আইন ব্যবস্থা

১. ব্যাংকের শ্রেণীবিভাগ

বাংলাদেশে কার্যত দেশি-বিদেশি সকল ব্যাংককে দুই ধরনের ভাগে রাখা যায়:

শ্রেণি ব্যাখ্যা
তালিকাভুক্ত ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২-এর ৩৭ ধারানুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অফিসিয়ালি তালিকাভুক্ত ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদস্য ও নিয়ন্ত্রণাধীন।
তালিকাভুক্ত ব্যাংক যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত নয়। যেমন: ইডেন ব্যাংক, সৈয়দপুর কমার্শিয়াল ব্যাংক, কুমিল্লা কো-অপারেটিভ ব্যাংক, দিনাজপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক, রাজশাহী ব্যাংক, শঙ্কর ব্যাংক, ফরিদপুর ব্যাংকিং কর্পোরেশন, মাদারীপুর কমার্শিয়াল ব্যাংক।

তালিকাভুক্ত ব্যাংকের গুরুত্ব:

 

২. ব্যাংকিং খাতে আমানত ও ঋণের অবস্থা

২০০০ সালের ৩১ মার্চের তথ্য অনুযায়ী:

ব্যাংকের ধরন আমানতের শেয়ার (%) ঋণের শেয়ার (%)
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ৫৭.২৮ ৫১.৬৬
দেশীয় বেসরকারি ব্যাংক ২৯.০১ ২৯.২৫
বিদেশি ব্যাংক ৮.৪২ ৬.০৩
বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৫.২৯ ১৩.০৬

২০০৯-১০ অর্থবছরে আমানত সম্পদের পরিবর্তন:

ব্যাংকের ধরন আমানতের শেয়ার (%) মোট সম্পদের শেয়ার (%)
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ৩৫ ৩২
দেশীয় বেসরকারি ব্যাংক ৫৩ ৫০

উল্লেখ্য, এই সময়কালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আমানত ও সম্পদের অংশ উল্লেখযোগ্য হ্রাস পায়, আর দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকের অংশ বৃদ্ধি পায়।

 

৩. করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকিং ও মার্চেন্ট ব্যাংক

 

৪. ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রণ

 

৫. বাংলাদেশে ব্যাংকিং আইন

ক. প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ

খ. পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ

 

৬. ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ

 

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত :

 

আরও দেখুন:

Exit mobile version