[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস | এইচএসসি ব্যাংকিং ও বিমা

আজকের ক্লাসে আমরা আলোচনা করব “আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস” সম্পর্কে, যা ১ম অধ্যায় (Chapter 1) হিসেবে এইচএসসি ব্যাংকিং ও বিমা (HSC Banking and Insurance) পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। এই অধ্যায়টি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ব্যাংকিং ও বিমা দ্বিতীয় পত্র (2nd Paper)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

এই অধ্যায়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সূচনা, ধাপে ধাপে তার উন্নয়ন এবং বর্তমান বৈশ্বিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিবর্তনের একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা লাভ করবে।

 

Table of Contents

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস

 

 

প্রাচীন ভারতে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ইতিহাস

ব্যাংকিংয়ের প্রাচীন ইতিহাস:

খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ সাল পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাংকিং কার্যক্রমের কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও, ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক আর্থিক সহায়তার চর্চা ছিল বলেই জানা যায়। এ সময় ধনিক শ্রেণি তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ পিতলের কলস বা পাতিলে ভরে মাটির নিচে পুঁতে রাখত এবং স্বর্ণ বা রৌপ্য পাত্রের গায়ে আর্থিক হিসাব লিখে রাখার রীতি ছিল।

ব্যাংকিং ধারণার সূচনা:

তৎকালীন সমাজে ব্যাংকিং ব্যবসার আনুষ্ঠানিক রূপ না থাকলেও ঋণগ্রহণ, সুদ প্রদান ও আর্থিক লেনদেনের ধারণা মানুষ জানত। ঋণ সুদ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা সেই সময়কার জনগণের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।

ঋণ ব্যবস্থা বৈদিক যুগেও:

বৈদিক আমলেও ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের রীতি প্রচলিত ছিল। প্রাচীন হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ-এ ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের উল্লেখ পাওয়া যায়। সেই সময় মন্দির উপাসনালয় ছিল ব্যাংক কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল।

মনুসংহিতা কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে ব্যাংকিং:

  • ঋষি মনু অর্থ ধার ও প্রদান নিয়ে নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করেছিলেন। তার মতে, “সজ্জন, চরিত্রবান, আইনজ্ঞানসম্পন্ন, এবং সম্মানিত ও ধনী আত্মীয়বেষ্টিত ব্যক্তির কাছে অর্থ আমানত রাখা উচিত।”
  • কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র নামক প্রাচীন গ্রন্থেও ব্যাংকিং ও সুদের সুস্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে।

স্যার রিচার্ড টেম্পলের অভিমত:

ইতিহাসবিদ স্যার রিচার্ড টেম্পলের মতে, প্রাচীন ভারতে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল, যদিও তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল না।

 

মুগল আমলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার বিকাশ

স্বর্ণমুদ্রা অর্থ ব্যবসা:

মুগল আমলে বিভিন্ন মূল্যের স্বর্ণমুদ্রা প্রচলিত ছিল, যা অর্থ ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করে। এ সময় স্থানীয় কিছু পরিবার অর্থ ব্যবসায়ে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।

জগৎশেঠ পরিবারের অবদান:

  • জগৎশেঠ পরিবার ছিল তৎকালীন অর্থব্যবস্থায় সবচেয়ে প্রভাবশালী।
  • তাদের শাখা ছিল ঢাকা, হুগলি, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি ব্যবসায়িক কেন্দ্রে।
  • মুগল শাসকরা প্রায়ই এ পরিবারের কাছ থেকে ঋণ নিতেন এবং তাদের আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।

টাকশাল হুন্ডির ব্যবহার:

  • জনগণ মুগল আমলে অল্প খরচে টাকশালে স্বর্ণ বা রুপা রূপান্তর করতে পারত।
  • হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেনের প্রথাও চালু ছিল।

সরকারি রাজস্ব সংগ্রহ ব্যাঙ্কের ভূমিকা:

  • জমিদারগণ তাদের সংগ্রহকৃত রাজস্ব পারিবারিক ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে পাঠাতেন।
  • এমনকি অনাদায়ি রাজস্বও ব্যাংকের মাধ্যমেই পাঠানো হতো।

বিভিন্ন স্তরের ব্যাংকার:

মুগল আমলে সমাজে বৃহৎ পুঁজিপতি থেকে শুরু করে গ্রাম্য মহাজন পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের মানুষ নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করত।

 

আধুনিক ব্যাংকিংয়ের সূচনা:

  • মুগল আমলেই ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাংক ব্যবস্থার মূল কাঠামো গঠিত হয়।
  • ১৭০০ সালে কলকাতায় ‘দ্য হিন্দুস্থান ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা এই অঞ্চলের প্রথম আধুনিক ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পায়।

 

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমন ও ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকিং ব্যবস্থার পতন

১৭৫৭ সালের প্লাসি যুদ্ধ এবং ১৭৬৫ সালে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে জগৎশেঠসহ তৎকালীন অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী ব্যাংকারদের অবস্থা ক্রমেই অবনতির দিকে যেতে থাকে। তাদের আর্থিক ক্ষমতা এবং প্রভাব-প্রতিপত্তি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। ইংরেজদের সহযোগী মীরজাফর ও তার অনুসারীদের সহায়তায় জগৎশেঠ পরিবারের ঐতিহাসিক ব্যাংক ব্যবসা দ্রুত ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়।

 

আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার সূচনা

ঐ সময়ে অভ্যন্তরীণ ও বহির্বাণিজ্যের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে ইংরেজরা ইংলিশ এজেন্সি হাউস প্রতিষ্ঠা করে। এরপর, ১৭৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল ব্যাংক ব্রিটিশ ভারতে প্রথম আধুনিক ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি পায়।

 

বাংলাদেশে আধুনিক ব্যাংকিংয়ের প্রাথমিক পর্যায়

  • ১৮০৬: বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্যিক ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ১৮৬২: বেঙ্গল ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক অধিগ্রহণ করে।
  • ১৮৭৩-১৯০০: বেঙ্গল ব্যাংক সিরাজগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে শাখা স্থাপন করে।
  • ১৯৪৭: দেশভাগের পূর্বে বাংলাদেশে বেঙ্গল ব্যাংকের ৬টি শাখা ছিল — ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রংপুর, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ।

প্রেসিডেন্সি ব্যাংক ও রিজার্ভ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা

ব্যাংকের নামপ্রতিষ্ঠার সাল
ব্যাংক অব ক্যালকাটা১৮০৬
ব্যাংক অব বোম্বে১৮৪০
ব্যাংক অব মাদ্রাজ১৮৪৩
দি ইম্পেরিয়াল ব্যাংক১৯২১ (সমন্বয়ে)
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া১৯৩৫

লোন অফিস ও স্থানীয় ব্যাংকসমূহের বিস্তার (বাংলাদেশ অঞ্চলে)

লোন অফিসের অবস্থান ও বছর

জেলা/উপজেলাপ্রতিষ্ঠার সাল
ফরিদপুর১৮৬৫
বগুড়া১৮৭২
বরিশাল১৮৭৩
ময়মনসিংহ১৮৭৩
নাসিরাবাদ১৮৭৫
যশোর১৮৭৬
মুন্সিগঞ্জ১৮৭৬
ঢাকা১৮৭৮
সিলেট১৮৮১
পাবনা১৮৮২
কিশোরগঞ্জ১৮৮৩
নোয়াখালী১৮৮৫
খুলনা১৮৮৭
মাদারীপুর১৮৮৭
টাঙ্গাইল১৮৮৭
নীলফামারী১৮৯৪
রংপুর১৮৯৪

স্থানীয় ব্যাংকসমূহ

ব্যাংকের নামপ্রতিষ্ঠার সাল
কুড়িগ্রাম ব্যাংক১৮৮৭
কুমারখালী ব্যাংক১৮৯৬
মহালক্ষ্মী ব্যাংকঅজ্ঞাত
চট্টগ্রাম ব্যাংক১৯১০
দিনাজপুর ব্যাংক১৯১৪
কুমিল্লা ব্যাংকিং কর্পোরেশন১৯১৪
কুমিল্লা ইউনিয়ন ব্যাংক১৯২২

ভারতীয় ব্যাংক যাদের বাংলাদেশে শাখা ছিল

ব্যাংকের নামপ্রতিষ্ঠার সাল
ন্যাশনাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া১৮৬৪
বেঙ্গল সেন্ট্রাল ব্যাংক১৯১৮
নিউ স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক১৯২০
ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া১৯২১
হাবিব ব্যাংক১৯৪১
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লি.১৯৪২

পাকিস্তান আমলে ব্যাংকিং ব্যবস্থার ধারা

  • ১৯৪৮: স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ১৯৪৯: ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান গঠিত হয়।
  • পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত ছিল মাত্র ৩টি পাকিস্তানি ব্যাংক:
    • ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান
    • হাবিব ব্যাংক
    • অস্ট্রেলেশিয়া ব্যাংক

১৯৫৯–১৯৬৫ সময়ে বাংলাদেশে কার্যরত পাকিস্তানি ব্যাংক

ব্যাংকের নাম
দি ইউনাইটেড ব্যাংক
ইউনিয়ন ব্যাংক
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
কমার্স ব্যাংক

পূর্ব পাকিস্তানের নিজস্ব ব্যাংক (প্রধান কার্যালয় ঢাকায়)

ব্যাংকের নামপ্রতিষ্ঠার সালবর্তমান নাম
ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেড১৯৫৯পূবালী ব্যাংক লিমিটেড
ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন লিমিটেড১৯৬৫উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড

ব্যাংক শাখার সংখ্যা পরিবর্তনের ধারা

বছরশাখার সংখ্যা
১৯০১২৫টি
১৯৪৬৬৬৮টি
১৯৫০১৪৮টি
১৯৬৫৫৪৫টি
১৯৭০১,০৭৫টি

 

 

 

google news logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থার গঠন ও বিকাশ

ব্যাংকিং কার্যক্রমের সূচনা (১৯৭১ পরবর্তীকাল)

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর পাকিস্তান হতে ১,১৩০টি ব্যাংক শাখা উত্তরাধিকারসূত্রে পায়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারের প্রথম পদক্ষেপ ছিল:

  • বিদেশি ব্যাংক বাদে, বাংলাদেশে কার্যরত সকল পাকিস্তানি মালিকানাধীন ব্যাংক অধিগ্রহণ
  • ১৯৭২ সালের “ব্যাংক জাতীয়করণ আদেশ” এর মাধ্যমে এসব ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্তকরণ।

 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন

পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত ১০টি পাকিস্তানি ব্যাংক এবং পূর্বেই প্রতিষ্ঠিত ২টি বাংলাদেশি ব্যাংক একত্র করে ৬টি নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক গঠন করা হয়। নিচের ছকে পূর্বতন ব্যাংকগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ব্যাংকসমূহের বিবরণ দেওয়া হলো:

নতুন ব্যাংকের নামএকত্রীকৃত ব্যাংকসমূহ
সোনালী ব্যাংকদ্য ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, দ্য ব্যাংক অব বাহাওয়ালপুর, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক
অগ্রণী ব্যাংকহাবিব ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক
জনতা ব্যাংকদ্য ইউনাইটেড ব্যাংক, দ্য ইউনিয়ন ব্যাংক
রূপালী ব্যাংকদ্য মুসলিম কমার্শিয়াল ব্যাংক, দ্য স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
পূবালী ব্যাংকদ্য অস্ট্রেলেশিয়া ব্যাংক, দ্য ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক
উত্তরা ব্যাংকদ্য ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন

 

বাংলাদেশ ব্যাংক: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা ও কাঠামো

প্রতিষ্ঠা ও দায়িত্ব

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী। এটি পূর্ব পাকিস্তানে কার্যরত স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান-এর ঢাকা ডেপুটি গভর্নর অফিস থেকে রূপান্তরিত হয় এবং দেশের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে কাজ শুরু করে।

মূল দায়িত্বসমূহ:

  • নোট ইস্যু
  • ব্যাংকিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ ও লাইসেন্স প্রদান
  • বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ
  • আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকিং খাতের সার্বিক তদারকি

 

কাঠামোগত বিবরণ

বিষয়বিবরণ
মূলধন৩ কোটি টাকা
শেয়ার সংখ্যা৩ লক্ষ শেয়ার (প্রতিটি ১০০ টাকা করে)
মালিকানাবাংলাদেশ সরকার (সম্পূর্ণ)
আইনি অবস্থাসরকার মালিকানাধীন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান
পরিচালনা পর্ষদ৯ সদস্যবিশিষ্ট বোর্ড দ্বারা পরিচালিত

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ

বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৯টি আঞ্চলিক শাখা অফিস রয়েছে, যেগুলো নিম্নরূপ:

  • মতিঝিল (ঢাকা প্রধান কার্যালয়)
  • সদরঘাট (ঢাকা)
  • চট্টগ্রাম
  • খুলনা
  • রাজশাহী
  • সিলেট
  • বগুড়া
  • রংপুর
  • বরিশাল

 

এইভাবে স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে একটি নতুন রাষ্ট্রভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, যার কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং যার লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ আর্থিক কাঠামো গঠন করা।

 

 

ব্যাংক সম্পর্কে ধারণা

 

বাংলাদেশে কার্যরত ব্যাংকসমূহের শ্রেণিবিন্যাস ও গঠন

বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবস্থা বহুবিধ শ্রেণিতে বিভক্ত, যা কার্যপ্রণালি, মালিকানা ও উদ্দেশ্য অনুসারে শ্রেণিকরণ করা যায়।

 

১. শাখা ভিত্তিক ব্যাংকিং কাঠামো

বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক শাখাভিত্তিক ব্যাংক, যাদের নিজস্ব সত্তা নেই। এরা তাদের প্রধান কার্যালয়ের অধীন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিদেশেও শাখা স্থাপন করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে।

  • বিদেশে অবস্থিত শাখাগুলোকে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের আইন ও বাংলাদেশের প্রযোজ্য আইনের সমন্বয়ে পরিচালিত হতে হয়।

 

২. ব্যাংক স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত কাঠামো

বাংলাদেশে যে কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি ব্যাংক স্থাপন করতে চায়, তাদেরকে অবশ্যই নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:

ধাপবিবরণ
কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ অনুযায়ী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন
রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ থেকে Certificate of Incorporation সংগ্রহ
শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (BSEC) এর অনুমোদন

 

৩. মালিকানাভিত্তিক ব্যাংকের শ্রেণিবিন্যাস

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে নিচের মালিকানার ভিত্তিতে শ্রেণিবিন্যাস করা যায়:

শ্রেণিব্যাখ্যা
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসরকার মালিকানাধীন
বেসরকারি ব্যাংকব্যক্তিমালিকানাধীন বা কর্পোরেট মালিকানাধীন
স্বায়ত্তশাসিত ব্যাংকসরকারের মালিকানায় চললেও পরিচালনায় স্বায়ত্তশাসন
বিদেশি ব্যাংকবিদেশি মালিকানাধীন ও পরিচালিত
মিশ্র মালিকানার ব্যাংকসরকার ও বেসরকারি উভয়ের যৌথ মালিকানাধীন

 

৪. রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসমূহ

বর্তমানে বাংলাদেশে তিনটি পুরোপুরি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক রয়েছে এবং তিনটি পূর্বে রাষ্ট্রায়ত্ত থাকলেও এখন বেসরকারিকরণ হয়েছে।

ব্যাংকের নামঅবস্থামন্তব্য
সোনালী ব্যাংকরাষ্ট্রায়ত্তসম্পূর্ণরূপে সরকারি মালিকানাধীন
জনতা ব্যাংকরাষ্ট্রায়ত্তসম্পূর্ণরূপে সরকারি মালিকানাধীন
অগ্রণী ব্যাংকরাষ্ট্রায়ত্তসম্পূর্ণরূপে সরকারি মালিকানাধীন
রূপালী ব্যাংকমিশ্র মালিকানা৫১% সরকারি, ৪৯% পাবলিক শেয়ার
উত্তরা ব্যাংকবেসরকারিকরণ (১৯৮৩)সম্পূর্ণ ব্যক্তিমালিকানাধীন
পূবালী ব্যাংকবেসরকারিকরণ (১৯৮৬)সম্পূর্ণ ব্যক্তিমালিকানাধীন

 

৫. বেসরকারি ব্যাংকসমূহ (প্রতিষ্ঠা সালসহ)

নিচের টেবিলে দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকসমূহকে প্রতিষ্ঠার সাল অনুযায়ী সাজানো হয়েছে:

ব্যাংকের নামপ্রতিষ্ঠার সালমন্তব্য
উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড১৯৭২ (১৯৮৩ সালে বেসরকারিকরণ)প্রাক্তন রাষ্ট্রায়ত্ত
পূবালী ব্যাংক লিমিটেড১৯৭২ (১৯৮৬ সালে বেসরকারিকরণ)প্রাক্তন রাষ্ট্রায়ত্ত
আইএফআইসি ব্যাংক১৯৭৬
ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ১৯৮৩
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক১৯৮৩
দ্য সিটি ব্যাংক১৯৮৩
ন্যাশনাল ব্যাংক১৯৮৩
আরব-বাংলাদেশ ব্যাংক১৯৮৫
ইস্টার্ন ব্যাংক১৯৯২
এনসিসি ব্যাংক১৯৯৩
প্রাইম ব্যাংক১৯৯৫
সাউথইস্ট ব্যাংক১৯৯৫
ঢাকা ব্যাংক১৯৯৫
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক১৯৯৫
সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক১৯৯৫
ডাচ-বাংলা ব্যাংক১৯৯৬
প্রিমিয়ার ব্যাংক১৯৯৯
মার্কেন্টাইল ব্যাংক১৯৯৯
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক১৯৯৯
ওয়ান ব্যাংক১৯৯৯
এক্সিম ব্যাংক১৯৯৯
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক১৯৯৯
মিচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক১৯৯৯
ট্রাস্ট ব্যাংক১৯৯৯
ব্যাংক এশিয়া১৯৯৯
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক১৯৯৯
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক২০০১
যমুনা ব্যাংক২০০১
ব্র্যাক ব্যাংক২০০১
আইসিবি ইসলামী ব্যাংকপূর্বতন ওরিয়েন্টাল ব্যাংক

 

৬. বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহ

বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক খাতকে লক্ষ্য করে গঠিত, যেগুলোকে বিশেষায়িত ব্যাংক বলা হয়।

ব্যাংকের নামপ্রতিষ্ঠা সালউদ্দেশ্য
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক১৯৭৩কৃষিখাতে অর্থায়ন
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক১৯৮৭কৃষি উন্নয়ন
বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক১৯৭২শিল্পখাতে অর্থায়ন
কর্মসংস্থান ব্যাংক১৯৯৭আত্ম-কর্মসংস্থান সহায়তা
সমবায় ব্যাংক১৯৪৮সমবায়ীদের ঋণ ও সঞ্চয় বৃদ্ধি
বেসিক ব্যাংক লিমিটেড১৯৯২ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে অর্থায়ন
শিল্প ঋণ সংস্থা (পরবর্তীকালে বিডিবিএল)১৯৭২ (২০১০ সালে রূপান্তরিত)দীর্ঘমেয়াদি শিল্প অর্থায়ন

বর্তমানে দেশে বিশেষায়িত ব্যাংকের সংখ্যা মোট ৪টি।

 

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি

 

বিদেশি ব্যাংকসমূহ

বাংলাদেশে বর্তমানে বেশ কয়েকটি বিদেশি ব্যাংক তাদের শাখা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এগুলো মূলত আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর এক্সটেনশন হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করে থাকে এবং স্থানীয় ও বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

বিদেশি ব্যাংকসমূহ ও বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর সাল

ব্যাংকের নামবাংলাদেশে কার্যক্রম শুরুর সাল
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক
স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া১৯৭৬
দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন (HSBC)১৯৯২
ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান১৯৯৫
সিটি ব্যাংক এন.এ১৯৯৫
হাবিব ব্যাংক লিমিটেড১৯৯৭
কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলোন লিমিটেড২০০৩
ব্যাংক আল-ফালাহ২০০৫
উরি ব্যাংক (দক্ষিণ কোরিয়া)১৯৯৬

বিগত একীকরণ পরিবর্তন:

  • ২০০২ সালে ANZ Grindlays ব্যাংক এবং ২০০৫ সালে American Express ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হয়।
  • ক্রেডিট এগ্রিকোল ইন্দোসুয়েজ ব্যাংকের যাবতীয় সম্পদ ও দায় গ্রহণ করে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলোন ২০০৩ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে।

বর্তমান হিসাব অনুযায়ী (২০১০ সালের মধ্যে), বাংলাদেশে ৯টি বিদেশি ব্যাংক সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

মার্চেন্ট ব্যাংকিং ও বিনিয়োগ ব্যাংকিং

বাংলাদেশে বর্তমানে কোন স্বতন্ত্র মার্চেন্ট ব্যাংক বা বিনিয়য় ব্যাংক (Investment Bank) নেই। তবে কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংক সীমিত আকারে মার্চেন্ট ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে থাকে।

  • সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সম্প্রতি ২৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মার্চেন্ট ব্যাংকিং-এর জন্য অনুমোদন দিয়েছে।
  • এছাড়াও ২২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান লিজিং কোম্পানিকে বিনিয়োগ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।

বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন ও অনুমোদিত ডিলার

ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৭ অনুসারে, রাষ্ট্রায়ত্ত এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখাকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের জন্য অনুমোদিত ডিলার (Authorized Dealer) হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

  • এসব অনুমোদিত ডিলাররা বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (BAFEDA)-র সদস্য।
  • এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনপ্রাপ্ত ৫৫৪টি মানি চেঞ্জারস প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।

বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাত: শ্রেণীবিভাগ, আমানত-ঋণ ও আইন ব্যবস্থা

১. ব্যাংকের শ্রেণীবিভাগ

বাংলাদেশে কার্যত দেশি-বিদেশি সকল ব্যাংককে দুই ধরনের ভাগে রাখা যায়:

শ্রেণিব্যাখ্যা
তালিকাভুক্ত ব্যাংকবাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২-এর ৩৭ ধারানুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অফিসিয়ালি তালিকাভুক্ত ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সদস্য ও নিয়ন্ত্রণাধীন।
তালিকাভুক্ত ব্যাংকযারা বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকাভুক্ত নয়। যেমন: ইডেন ব্যাংক, সৈয়দপুর কমার্শিয়াল ব্যাংক, কুমিল্লা কো-অপারেটিভ ব্যাংক, দিনাজপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক, রাজশাহী ব্যাংক, শঙ্কর ব্যাংক, ফরিদপুর ব্যাংকিং কর্পোরেশন, মাদারীপুর কমার্শিয়াল ব্যাংক।

তালিকাভুক্ত ব্যাংকের গুরুত্ব:

  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাঠামো, মূলধন সংরক্ষণ, তহবিল ও বিবরণী দাখিলসহ নিয়মাবলী মেনে চলা।
  • রি-ডিসকাউন্টিং সুবিধা, মুদ্রা বাজার অংশগ্রহণ, ক্লিয়ারিং ব্যবস্থা, ডিপোজিট স্কিম ও আইনগত মর্যাদা লাভ।

 

২. ব্যাংকিং খাতে আমানত ও ঋণের অবস্থা

২০০০ সালের ৩১ মার্চের তথ্য অনুযায়ী:

ব্যাংকের ধরনআমানতের শেয়ার (%)ঋণের শেয়ার (%)
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক৫৭.২৮৫১.৬৬
দেশীয় বেসরকারি ব্যাংক২৯.০১২৯.২৫
বিদেশি ব্যাংক৮.৪২৬.০৩
বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান৫.২৯১৩.০৬

২০০৯-১০ অর্থবছরে আমানত সম্পদের পরিবর্তন:

ব্যাংকের ধরনআমানতের শেয়ার (%)মোট সম্পদের শেয়ার (%)
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক৩৫৩২
দেশীয় বেসরকারি ব্যাংক৫৩৫০

উল্লেখ্য, এই সময়কালে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আমানত ও সম্পদের অংশ উল্লেখযোগ্য হ্রাস পায়, আর দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকের অংশ বৃদ্ধি পায়।

 

৩. করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকিং ও মার্চেন্ট ব্যাংক

  • বাংলাদেশি ব্যাংকসমূহ বিদেশি ব্যাংকের সাথে করেসপন্ডেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্ক রক্ষা করে ব্যবসা সম্প্রসারণ করে।
  • দেশীয় কোন স্বতন্ত্র মার্চেন্ট ব্যাংক বা বিনিময় ব্যাংক নেই, তবে বাণিজ্যিক ব্যাংক আংশিক মার্চেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদন করে।
  • সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ২৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমোদন দিয়েছে।
  • ২২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লিজিং কোম্পানিকে বিনিয়োগ ব্যাংকিং করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

 

৪. ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রণ

  • ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৭ অনুযায়ী কিছু ব্যাংককে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় করার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। এই ব্যাংকগুলোকে বলা হয় অনুমোদিত ডিলার
  • অনুমোদিত ডিলারদের সংগঠন: বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (BAFEDA)
  • অনুমোদিত ডিলার ব্যতীত বাংলাদেশে ৫৫৪টি মানি চেঞ্জার রয়েছেন, যারা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ও নিয়ন্ত্রণে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে।

 

৫. বাংলাদেশে ব্যাংকিং আইন

ক. প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ

  • বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২
  • ব্যাংক কোম্পানি অ্যাক্ট, ১৯৯১
  • বাংলাদেশ ব্যাংক (ন্যাশনালাইজেশন) অর্ডার, ১৯৭২
  • কোম্পানিজ অ্যাক্ট, ১৯১৩ ও ১৯৯৪
  • ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অর্ডার, ১৯৮৪
  • ব্যাংকর‌্যাপসি অ্যাক্ট, ১৯৯৭
  • ইনসলভেন্সি অ্যাক্ট, ১৯২০
  • ফিন্যান্সসিয়াল কোর্ট অ্যাক্ট, ১৯৯০
  • ফরেন এক্সচেঞ্জ (রেগুলেশন) অ্যাক্ট, ১৯৬৮
  • ফিন্যান্সসিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যাক্ট, ১৯৯৩
  • ফিন্যান্সসিয়াল রুলস, ১৯৯৪
  • কো-অপারেটিভ সোসাইটিজ অ্যাক্ট, ১৯৮৪

খ. পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ

  • কোড অব সিভিল প্রসিডিউর, ১৮৯৮
  • কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৯৯৮
  • এভিডেন্স অ্যাক্ট, ১৯৭২
  • জেনারেল ক্লজেস অ্যাক্ট, ১৮৯৭
  • লিমিটেশনস অ্যাক্ট, ১৯০৮
  • নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস অ্যাক্ট, ১৮৮১
  • পেনাল কোড, ১৮৬০
  • ট্রাস্ট অ্যাক্ট, ১৮৮২
  • ট্রান্সফার অব প্রপার্টি অ্যাক্ট
  • বাংলাদেশ চার্টার্ড একাউন্টেন্ট অর্ডার, ১৯৭৩

 

৬. ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ

  • ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক সংস্কার ও আধুনিকীকরণ সাধিত হয়েছে।
  • রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়েছে।
  • ATM বুথ ও One Line Banking সিস্টেম চালু হয়েছে, যা যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত।
  • ব্যাংকগুলোকে ব্যাসেল-মানদণ্ডে পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
  • বাংলাদেশ ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে ২০০৭ সালে সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
  • মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০০২ প্রণয়ন ও ২০০৮ সালে আধুনিকায়ন করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

 

আধুনিক ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত :

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment