[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক।এটি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ইসলামি ব্যাংক। ব্যাংকটি ১৯৮৩ সালের ১৩ই মার্চ কোম্পানি আইন, ১৯১৩-এর অধীনে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্যিক ব্যাংক যার ৩৬.৯১% স্থানীয় এবং ৬৩.০৯% বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে।মোট ৬২৩ টি শাখা নিয়ে এই ব্যাংকটি দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ ব্যাংক হিসেবে স্থান পেয়েছে।এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মূলধনি প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাতে দেশের সবচেয়ে লাভজনক ব্যাংক।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের তালিকাভুক্ত এই প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত মূলধন ২০,০০০ মিলিয়ন টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৬,৬৩৬.২৮ মিলিয়ন টাকা।যুক্তরাজ্য ভিত্তিক শতাব্দী পুরাতন অর্থনীতি বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘দ্য ব্যাংকার’ এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ৯ বছর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডকে বিশ্বের ১,০০০ শীর্ষ ব্যাংকের তালিকায় একমাত্র ও প্রথম বাংলাদেশী ব্যাংক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এর ইতিহাস

১৯৭৯ সালে নভেম্বরে [[সংযুক্ত আরব আমিরাত|সংযুক্ত আরব আমিরাতে]] নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মহসিন দুবাই ইসলামি ব্যাংকের অনুরূপ বাংলাদেশে একটি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য পররাষ্ট্র সচিবের কাছে লেখা এক চিঠিতে সুপারিশ করেন। এর পরপরই ডিসেম্বর মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং উইং বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিমত জানতে চায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি হিসেবে তৎকালীন গবেষণা পরিচালক এ এস এম ফখরুল আহসান ১৯৮০ সালে ইসলামি ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনার জন্য দুবাই ইসলামি ব্যাংক, মিসরের ফয়সাল ইসলামি ব্যাংক, নাসের সোশ্যাল ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যাংক সমিতির কায়রো অফিস পরিদর্শন করেন। ১৯৮১ সালে তিনি বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন পেশ করেন।

 

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ

 

১৯৮০ সালের ১৫-১৭ ডিসেম্বর ইসলামী অর্থনীতি গবেষণা ব্যুরোর উদ্যোগে ঢাকায় ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮১ সালের মার্চে ওআইসিভূক্ত দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের সম্মেলন সুদানের রাজধানী খার্তুমে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে পেশকৃত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।

১৯৮১ সালে এপ্রিল মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে লেখা এক পত্রে পাকিস্তানের অনুরূপ বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর শাখাগুলোতেও পরীক্ষামূলকভাবে পৃথক ইসলামি ব্যাংকিং কাউন্টার চালু করে এ জন্য পৃথক লেজার রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে সোনালী ব্যাংক স্টাফ কলেজে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের ওপর এক মাস স্থায়ী সার্বক্ষণিক আবাসিক প্রশিক্ষণ কোর্স অনুষ্ঠিত হয়। এ কোর্সে বাংলাদেশ ব্যাংক, সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, বিআইবিএম ও প্রস্তাবিত ঢাকা আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড)-এর ৩৭ কর্মকর্তা অংশ নেন

১৯৮২ সালে নভেম্বর মাসে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেন। এ সময় তারা বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে যৌথ উদ্যোগে একটি ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় আইডিবির অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্র তৈরি করার ব্যাপারে ‘ইসলামী অর্থনীতি গবেষণা ব্যুরো’ (আইইআরবি) এবং বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক সমিতি (বিবা) অগ্রণী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বহুমাত্রিক চেষ্টার ফলস্বরূপ ১৯৮৩ সালের ১৩ মার্চ ঢাকায় আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড নামে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম শরীয়াভিত্তিক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৩ সালের ২৮ মার্চ পর্যন্ত ঢাকা আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড নামে বাংলাদেশের প্রথম ইসলামী ব্যাংকের প্রস্তুতিমূলক কাজ করা হয় এবং এ নামেই তখন পর্যন্ত ব্যাংকের সাইনবোর্ড ও প্রচার-পুস্তিকা ব্যবহার করা হয়। মফিজুর রহমান ২৯ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। এরপর ৩০ মার্চ থেকে এ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড নামে কার্যক্রম শুরু করে।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ মীর কাশেম আলী সহ ১৯জন বাংলাদেশি ব্যক্তিত্ব, ৪টি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এবং আইডিবিসহ মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের ১১টি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সংস্থা এবং সৌদি আরবের দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় উদ্যোক্তারূপে এগিয়ে আসেন। ব্যাংকের মনোগ্রাম তৈরি করেন শিল্পী ও ক্যালিগ্রাফার সবিহউল আলম।

দ্য ইকোনমিস্ট-এর মতে, “ইসলামী ব্যাংক চীনের বাইরে পোশাক শিল্পের প্রধান উৎপাদন ভিত্তি হিসেবে বাংলাদেশের উত্থানকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল।

২০১৭ সালের হিসাব অনুসারে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং সম্পদ এবং আমানতের ৯০% পরিচালনা করে থাকে, সামগ্রিকভাবে দেশের বৃহত্তম বেসরকারী ঋণদাতা, যার ১২ মিলিয়ন আমানতকারী এবং ১০ বিলিয়ন ডলারের ব্যালেন্স শীট রয়েছে।প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ব্যাংকটি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ছিল।২০১৭ সালে, বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে পরিচালকদের অপসারণ করে এবং পরিচালনা পর্ষদ ও মালিকানাতে পরিবর্তন আসে। তাদের পরিবর্তে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকদের নিয়ে আসা হয়। এরপর ব্যাংকটির বড় অংশের শেয়ার ও মালিকানা চট্টগ্রামের শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের অধীনে চলে যায়।তারপর থেকে, ব্যাংকটি আর্থিক সংকটে পড়ে।

 

google news logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

প্রধান অংশীদারগণ

  • ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি)
  • জর্ডান ইসলামীক ব্যাংক, জর্ডান
  • ইসলামীক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কর্পোরেশন, দোহা, কাতার
  • বাহরাইন ইসলামীক ব্যাংক, বাহরাইন
  • ইসলামীক ব্যাংকিং সিস্টেম ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং এস.এ.
  • মুদ্রা বিনিময় ও বাণিজ্যের জন্য আল-রাজি কোম্পানি
  • শেখ আহমেদ সালাহ জমজুম, জেদ্দা, কেএসএ
  • ফুয়াদ আব্দুলহামিদ আল-খতিব (প্রয়াত), কে.এস.এ
  • দুবাই ইসলামী ব্যাংক
  • দ্য পাবলিক ইনস্টিটিউশন ফর সোশ্যাল সিকিউরিটি, সাফাত
  • কুয়েত ফিন্যান্স হাউস
  • কুয়েতের তিনটি মন্ত্রণালয়

ব্যাংকটির ৬৩.০৯% শেয়ার উপরিউক্ত বিদেশী অংশীদারগণের আর বাকি ৩০.৯১% এর মালিকানা বাংলাদেশের ৬০,০০০ শেয়ারহোল্ডারগণ।

 

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড

 

ডিজিটাল সেবা

  • আই ব্যাংকিং।
  • সেলফিন।
  • এসএমএস ব্যাংকিং।
  • মোবাইল ব্যাংকিং।
  • এটিএম সেবা।
  • এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা।
  • সিআরএম/সিডিএম সেবা।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment