[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক | এইচএসসি ব্যাংকিং ও বিমা

ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক বা “১ম অধ্যায় (chapter 1)” আজকের ক্লাসের আলোচ্য বিষয়। “ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক [ Banker & customer relationship ]” ক্লাসটি এইচএসসি’র ব্যাংকিং ও বিমা (HSC Banking and Insurance) এর সিলেবাসের অংশ। যা এইচএসসি’র ব্যাংকিং ও বিমা (HSC Banking and Insurance) বা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ব্যাংকিং ও বিমা ২য় পত্র (Class 11-12 Banking and Insurance 2nd Paper)” এর “১ম অধ্যায় (chapter 1)” এ পড়ানো হয়।

 

ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক

ব্যাংক ব্যবসায়ে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গকে ব্যাংকার বলে। আর ব্যাংকে হিসাব পরিচালনাকারীকে সাধারণ অর্থে গ্রাহক বলে। হিসাব পরিচালনাকারী আমানতকারী, ঋণগ্রহীতা, সেবাগ্রহীতা ইত্যাদি নামেও পরিচিত। ব্যাংকের পক্ষে যাবতীয় সেবা প্রদানকারী হলো ব্যাংকার। আমানতকারী তার নিজস্ব হিসাবে অর্থ জমা দেয়, উত্তোলন করে, প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করে, এছাড়াও নানাবিধ সেবা ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রহণ করে থাকে।

আমানতকারী ব্যাংকে অর্থ জমা করে নিরাপত্তার পাশাপাশি সুদ পাওয়ার নিশ্চয়তা পায়। অন্যদিকে, ব্যাংক আমানতকারীর আমানতি অর্থের ওপর কম সুদ প্রদান করে অপেক্ষাকৃত বেশি সুদে অন্য কোনো ঋণগ্রহীতাকে ঋণ প্রদান করে। ব্যাংকের আমানতকারীদের এই কম সুদ প্রদান এবং ঋণ প্রদানে বেশি সুদ পাওয়ার পার্থক্যটি হলো ব্যাংকের আয় ।

এই আয় হতে ব্যাংক ঋণের ব্যবসায়ের তার ব্যয়ভার বহন করে এবং অবশিষ্ট অর্থ মুনাফা হিসেবে রেখে দেয়। সুতরাং, ব্যাংকের আমানতকারী না থাকলে যেমন ব্যাংক ঋণের ব্যবসায় থেকে আয় এবং মুনাফা লাভ করতে পারত না, অন্যদিকে ব্যাংকারদের ছাড়া আমানতকারী এবং ঋণগ্রহীতা ব্যাংকের নানাবিধ সুবিধা গ্রহণ করতে পারত না। তাই ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবসায়িক এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাংকার-গ্রাহকের সম্পর্ককে আমরা বলতে পারি –

 

ব্যাংকার ও গ্রাহক

চিত্র : ব্যাংকার কর্তৃক গ্রাহককে সেবা প্রদান

 

▪️পাওনাদার-দেনাদার সম্পর্ক (Creditor-Debtor relationship) : গ্রাহক ব্যাংকের কাছে অর্থ জমা দিলে সেক্ষেত্রে ব্যাংকার দেনাদার এবং গ্রাহক পাওনাদার। আবার ব্যাংকার কোনো গ্রাহককে ঋণ দিলে তখন ব্যাংকার পাওনাদার এবং ঋণগ্রহীতা দেনাদারে পরিণত হন। এভাবে ব্যাংকার ও গ্রাহকের মধ্যে দেনাদার ও পাওনাদার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।

▪️ চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক (Contractual relationship) : গ্রাহক ব্যাংকে হিসাব খোলার মধ্য দিয়ে ব্যাংকের সাথে তার চুক্তিবদ্ধ সম্পর্ক স্থাপন করে। চুক্তিগত কারণে ব্যাংক আমানতকারীর অর্থ চাহিবামাত্র ফেরত দেয়ার অঙ্গীকারে আবদ্ধ।

▪️অছি (Trustee) : অনেক সময় ব্যাংকার মক্কেলের মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার, দলিলপত্রাদি সংরক্ষণ করে অছির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।

▪️ তত্ত্বাবধায়ক (Caretaker) : গ্রাহকের সঞ্চিত অর্থের নিরাপত্তা দিয়ে ব্যাংকার গ্রাহকের তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করে ।

▪️বন্ধক দাতা ও গ্রহীতা (Mortgage lender & recipient) : ব্যাংক গ্রাহককে বিভিন্ন প্রকার জামানতের বিপরীতে ঋণ মঞ্জুর করে। এর ফলে ব্যাংক ও গ্রাহকের মধ্যে বন্ধকদাতা ও গ্রহীতার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়।

▪️ প্রতিনিধি (Representative) : ব্যাংক মক্কেলের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তিতে প্রতিনিধিত্ব করে।

▪️পরিচয় দানকারী (Introducer) : মক্কেলের বাজার সুনাম, আর্থিক সচ্ছলতা ও ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে ব্যাংক পরিচয় দানকারী হিসেবে কাজ করে।

▪️তথ্য সরবরাহক (Provide information) : ব্যাংক তার ব্যবসায়ী গ্রাহকদেরকে ব্যবসায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করে।

▪️ বিল স্বীকৃতিকারী (Bill acceptor) : মক্কেলের নির্দেশমতো ব্যাংক মক্কেলের বিলে স্বীকৃতি প্রদান করে ।

▪️ সম্পদের সংরক্ষক (Conservator of assets) : মক্কেল কর্তৃক গুদামঘরে সংরক্ষিত পণ্যের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু সংরক্ষণে ব্যাংক তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করে।

 

google news logo
আমাদের গুগল নিউজে ফলো করুন

 

গ্রাহককে জানা (Knowing the customer) : ব্যাংকিং ব্যবসায়ে গ্রাহককে জানা বা তার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহকের পেশা, আয়ের উৎস, সুনাম-খ্যাতি ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা ব্যাংকারের উচিত। গ্রাহক মানিলন্ডারিং করছে কি না, অবৈধ লেনদেন করছে কি না, ঋণের অর্থ উপযুক্ত ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে কি না ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা বা তত্ত্বাবধান করা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এতে ব্যাংকের অর্থের জালিয়াতি হ্রাস পায়। ভুয়া নামে অন্য কেউ হিসাব পরিচালনা করছে কি না, ঋণের টাকা নিয়ে অন্য দেশে পাড়ি দিচ্ছে কি না ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে সতর্ক থাকতে হয়।

গারনিশি আদেশ (Garnishee order): Garnishee শব্দটি ল্যাটিন ‘Garnire’ শব্দটি হতে এসেছে। গ্রাহকের কোনো হিসাব ক্লোক বা বন্ধ করার বা লেনদেন স্থগিত করার জন্য আদালত কর্তৃক ব্যাংকের ওপর কোনো আদেশ প্রদত্ত হলে তাকে গারনিশি আদেশ বলে। গারনিশি আদেশ দু’ধরনের হয়। যথা- (১) সীমাবদ্ধ আদেশ অর্থাৎ জমাকৃত নির্দিষ্ট পরিমাণ অঙ্কের ওপর লেনদেন বন্ধের নির্দেশ। এতে হিসাব চালু থাকে এবং অতিরিক্ত অর্থের ওপর লেনদেন করা যায়। (২) সীমাহীন আদেশ অর্থাৎ ঐ হিসাবে কোনো লেনদেন করা যায় না। প্রয়োজনে নতুন হিসাব খুলে আমানতকারী লেনদেন করতে পারে।

 

গ্রাহক সেবার

 

ব্যাংকার ও গ্রাহক সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত :

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment